সিলেটের জৈন্তাপুরে এক রাজমিস্ত্রীর হাতে নিজের মেয়েসহ ধর্ষণের শিকার সেই নারীর কপালে জুটেছে আরেক বিড়ম্বনা। রাজমিস্ত্রী নিমারের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ২৫টি ভিডিওচিত্র ভাইরাল হওয়ার পরই তার রিকশাচালক স্বামী আব্দুর রশিদ তাকে তালাক দিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় দরবস্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার বলেন, শুনেছি ওই ঘটনার পর আব্দুর রশিদ তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ আমাকে এ বিষয়ে জানায়নি।
এদিকে এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন কানন মিলার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রাজমিস্ত্রী নিমার আলী। জবানবন্দি গ্রহণের পর রাতে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে জৈন্তাপুরে মা ও মেয়েকে ধর্ষণ করে মুঠোফোনে ভিডিওচিত্র ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে নিমার আহমদ (২৮) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জৈন্তপুরের দরবস্ত ইউনিয়নের ডেমা গ্রাম থেকে তাকে আটক করার পর পুলিশের কাছে ধর্ষণ ও ভিডিওচিত্র ধারণের বিষয়টি স্বীকার করেন ওই যুবক।
জৈন্তাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবির জানান, ধরা পড়ার পরপরই নিমার ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। তার মুঠোফোন থেকে ২৫টি ভিডিওচিত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে শুক্রবার মামলা দায়ের করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, নিমার আলী ডেমা গ্রামের কালাই মিয়ার ছেলে। পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। একই গ্রামের একজন রিকশাচালকের স্ত্রীর (৩০) সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। ওই নারীর সঙ্গে গত প্রায় ছয় মাসের বিভিন্ন সময়ে প্রায় ২০ বার শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও নিমারের মুঠোফোনে পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া, ওই নারীর ১৬ বছর বয়সী এক মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের আরও পাঁচটি ভিডিওচিত্র পাওয়া গেছে। গত রোববার থেকে বিভিন্ন পর্বের ২৫টি ভিডিওচিত্র মুঠোফোনে ছড়িয়ে পড়ার খবর পেয়ে নিমারকে শনাক্ত করে পুলিশ। গত বুধবার রাতে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ ধর্ষিত মা ও মেয়ের জবানবন্দি সংগ্রহ করেছে জানিয়ে জৈন্তাপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহিদ আনোয়ার জানান, ঘটনার শিকার ওই নারী জানিয়েছেন, তাকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে প্রথম দফা ধর্ষণ করে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন নিমার। পরে এ ভিডিও দেখিয়ে গত প্রায় ছয় মাসে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। পরে তার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক সপ্তাহ আগে নিমার একইভাবে ধর্ষণ করে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। ভিডিওচিত্র নিমারের হাতে থাকায় তিনি এ ব্যাপারে চুপ ছিলেন।




Discussion about this post