ছয় মুসলিম দেশের নাগরিকদের লক্ষ্য করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা সাম্প্রতিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আইনি বৈধতা নির্ধারণের বিষয়ে একমত হয়েছেন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।এর আগে দুই দফা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির পর আদালতের বাধার মুখে পড়েন ট্রাম্প। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহ পর ট্রাম্প এবিষয়ে প্রথম পদক্ষেপ নেন তিনি। আর এখন সেই পদক্ষেপের বিষয়ে তৃতীয় ধাপের আইনি লড়াই চলছে।গত বছরের এপ্রিলে এই বিষয়ে শুনানির পর জুনে সুপ্রিম কোর্ট এক রুলিং দেয়। এতে বলা হয় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ফেডারেল অভিবাসন আইন ভঙ্গ করছে। একই সাথে মার্কিন সংবিধানের ধর্মীয় বৈষম্য নিরসন ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই নিষেধাজ্ঞা। এরপর সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প ছয়টি মুসলিম দেশ চাদ, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সাম্প্রতিক আদেশ জারি করেন ট্রাম্প।
চলতি ধাপে এধরণের বেশ কয়েকটি মামলা সামলাচ্ছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। গত ৪ ডিসেম্বর ইঙ্গিত দেওয়া হয় তারা ট্রাম্পের নীতিকে সমর্থন করতে পারেন। নিম্ন আদালত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে বন্ধ করে দিলেও সুপ্রিম কোর্ট ৭-২ ভোটে তা পুরোপুরি কার্যকরের পক্ষে মত দেন। এরপর হাওয়াই রাজ্যসহ অন্যরা এই বিষয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যায়।রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের হাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করতে তার নীতির দরকার রয়েছে।হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র বলছেন, আমরা আত্মবিশ্বাসী যে সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্টের আইনি আর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে সমর্থন দেবেন।
আর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আইনি বিরোধীতাকারীরা বলছেন, ট্রামে্পর মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাব থেকেই এই নীতি নেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময়ে করা কিছু মন্তব্য তারা আদালতে যুক্ত হিসেবে তুলে ধরেছেন।হাওয়াই এর পাশাপাশি আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়নও আলাদাভাবে ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে। মেরিল্যান্ড আদালতে দাখিল করা চ্যালেঞ্জ এখন ভার্জিনিয়াভিত্তিক চতুর্থ মার্কিন সার্কিট আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়নের আইনজীবী ওমর জাভেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের একটি গ্রহণযোগ্য শেষ টানতে পারে। তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ধর্মীয় সাম্যের সাংবিধানিক নিশ্চয়তাকে অবজ্ঞা করে।
এসব মামলা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার এক চরম পরীক্ষা। মার্কিন সলিসিটর নোয়েল ফ্রান্সিসকো ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ নিয়ে আদালতে দাখিল করা কাগজপত্রে বলেছেন, প্রেসিডেন্টের রয়েছে বিস্তৃত ক্ষমতা। এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাস্ট্রের বাইরে থেকে আসা এলিয়েনদের জাতীয় স্বার্থে প্রবেশে বাধা দিতে পারেন।সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞায় ট্রাম্প গত ২৪ ডিসেম্বর স্বাক্ষর করেন।
Discussion about this post