সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ব্লেড দিয়ে জরায়ু কেটে সন্তান প্রসবের পর মৃত্যুর ঘটনায় সেই পল্লী চিকিৎসক লাল মোহন বর্মণকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পথে উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্ত এলাকার জিরোলাইন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার লাল মোহন উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বড়খলা গ্রামের মদন মোহন বর্মণের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই মো. মুহিত মিয়া জানান, গ্রেফতারকালে লাল মোহনের অপর সহযোগী উপজেলার বালিজুরী গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে পল্লী চিকিসক নুরুল আমিন পুলিশি ধাওয়ার মুখে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
প্রসঙ্গত গত বুধবার উপজেলার বড়খলা গ্রামের সুজিত বর্মণের স্ত্রী শৌমরী বর্মণের প্রসবব্যথা উঠলে বড়খলা গ্রামের চিকিৎসক লাল মোহন বর্মণ ও পার্শ্ববর্তী বালিজুরী গ্রামের চিকিৎসক নুরুল আমিনকে ডাকা হয়। প্রসূতিকে দেখে গর্ভের নবজাতককে মৃত বলে গর্ভপাতের পরামর্শ দেন। কিন্তু গ্রামের ধাত্রী রাজু বেগম ও প্রসূতি নিজেই বাধা দিয়ে জানান- সন্তান জীবিত আছে, পেঠের ভেতর নড়াচড়াও করছে।
একপর্যায়ে দুই পল্লী চিকিৎসক ব্লেড দিয়ে জরায়ুর মুখ কেটে নবজাতককে বের করে আনলে বাচ্চাটির মাথার বেশ কিছু অংশ কেটে যায়। তড়িঘড়ি করে চিকিৎসকরা নবজাতকের মাথায় ৫টি ও শৌমরী বর্মণের অধিক রক্তক্ষরণ হলে তার জরায়ুর মুখে ১৭টি সেলাই দেয়।
এদিকে পরিবারের লোকজন নবজাতকের নড়াচড়া দেখে তাৎক্ষণিক প্রসূতি ও নবজাতককে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথেই নবজাতকের মৃত্যু হয়। আর প্রসূতি ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
ওই ঘটনায় শৌমরী বর্মণের স্বামী সুজিত বর্মণ বাদী হয়ে সোমবার রাতে চিকিৎসায় অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু এবং প্রসূতিকে ভুল চিকিৎসার মাধমে গুরুতর আহত করার অভিযোগ এনে পল্লী চিকিৎসক লাল মোহন বর্মণ ও নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন।
Discussion about this post