নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিবাদ মেটানোর জন্য তিনজন এমপি এবং একজন সাবেক মেয়রের কাছে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে একজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ আরও ১০ জনকে।
সোমবার দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এসব শোকজ নোটিশ কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেয়ার তাগিদও দেয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
সূত্র জানায়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৪ নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে গত রবিবার দলের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নেয়ার পরই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
দলটির দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে কুরিয়ারযোগে চার জেলায় কোন্দলে জড়িত নেতাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ, কার্যনির্বাহী সদস্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা, বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকেও উকিল নোটিশ দেয়া হয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয়ের পেছনে দলীয় কোন্দলই বড় ভূমিকা কারণ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণীরা। এ কারণে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদউদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলমকে। একই সাথে দলের নেতাদের পক্ষে রাখতে না পারায় বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকেও নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া, দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপালকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া জাকা ও দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক হামিদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
রাজশাহীতে তিন নেতাকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দাদার সঙ্গে কোন্দলে জড়ানোয় নোটিশ পাঠানো হয়েছে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদকে। সংগঠনে কেন সম্প্রীতি বজায় রাখতে পারছেন না তা জানতে চিঠি দেয়া হয়েছে সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারাকেও।
বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারওয়ার টিপুকে।
এদিকে দলের গঠনতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত ৪৭ (ঠ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ১০ নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে বলে একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
Discussion about this post