কক্সবাজার প্রতিনিধি: ইয়াবা কারবারে অভিযুক্ত টেকনাফের জিয়াউর রহমান (৩৪) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। নিহত জিয়াউর রহমান কক্সবাজারের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার হাজি নুরুল ইসলামের ছেলে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, তাবলীগ জামায়াতের চিল্লায় থাকা অবস্থায় শুক্রবার রাতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার একটি মসজিদ এলাকা থেকে পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, রবিবার ভোরে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গুলিবিদ্ধ হয়ে জিয়ার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ২১ রাউন্ড গুলি ও ২০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। গোলাগুলিতে তিন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ দাশ।
ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, ভোরে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে ইয়াবার চালান পাচার হচ্ছে খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল সড়কের নোয়াখালীপাড়া এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াবা কারবারিরা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর ইয়াবা কারবারিরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ একজনকে পাওয়া যায়। তার পাশেই একটি বিদেশি পিস্তল, ২১ রাউন্ড গুলি ও ২০ হাজার ইয়াবাও পাওয়া যায়।
এ সময় থানা পুলিশের এসআই শরীফুল (৩৫), কনস্টেবল ছোটন দাশ (২৩) ও মেহেদী হাসান (২১) আহত হন। আহত পুলিশ ও গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। সেখানে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহটি জিয়াউর রহমানের (৩৪) বলে শনাক্ত করেন স্থানীয়রা।
অপরদিকে নিহত জিয়াউর রহমানের পরিবারের দাবি, গত ২০ সেপ্টেম্বর জিয়া তাবলীগ জামায়াতে ৩ মাসের জন্য চিল্লায় যান। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার একটি মসজিদের তাবলীগ জামায়াত থেকে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী কিছু লোক তাকে গত শুক্রবার রাতে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
জিয়াউর রহমানের মামা নুর কালাম নুরু জানান, তাবলীগের তার অন্য সাথীরা স্থানীয় থানায় গিয়ে বিষয়টি অবগত করলে জিয়াকে টেকনাফ থানা পুলিশ নিয়ে গেছে বলে জানায় টুঙ্গিপাড়া থানা পুলিশ। কিন্তু টেকনাফ থানা পুলিশ এটি অস্বীকার করে আসছিল। এর একদিন পরই জিয়ার গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া গেল।
এদিকে, কুষ্টিয়ায় পুলিশ এবং দু-দল ডাকাতের ত্রিমুখী ‘বন্দুকযুদ্ধে’ খোকন আলী ওরফে হাত কাটা ঠান্ডু (৪৫) নামের এক ডাকাত নিহত হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কুষ্টিয়া সদরের মোল্লা তেঘরিয়া ক্যানাল পাড়ায় ওই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দাবি দু-দল ডাকাত এবং পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী বন্দুকযুদ্ধে সে নিহত হয়। এঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানার এক এসআইসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি বিদেশী পিস্তল এবং ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন জানান, আধিপত্ত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া সদরের মোল্লা তেঘরিয়া ক্যানাল পাড়ায় দু-দল ডাকাতের মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে, এমন সংবাদে পুলিশ সেখান পৌছলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পুলিশের উপর গুলি চালায়, জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি করলে বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
এসময় ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়,পরে পুলিশ ঘটনাস্থল তল্লাসী করে এক ব্যাক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
পরে খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারেন নিহত ব্যাক্তির নাম খোকন আলী ওরফে হাত কাটা ঠান্ডু। সে সদর উপজেলার আলামপুর গ্রামের পুকুরপাড়া এলাকার মৃত আইজাল আলীর পুত্র। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ/কে




Discussion about this post