নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আজ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশন ভবনের অলিম্পিয়া ক্যাফে তে রাজশাহী বিশাববিদ্যালয় ল এলামনাই এসোসিয়েশন (রুলা) কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আসন্ন সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশন নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ কর্তৃক মনোনীত সভাপতি পদপ্রার্থী বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবী জনাব এম আমিন উদ্দিন। তিনি তার বক্তব্যে তার আইন পেশার শুরু কিভাবে করেছিলেন, তার আইন পেশা গুরু কে ছিলেন, আইন পেশায় নিয়োজিত সিনিয়র-জুনিয়র সম্পর্ক, যোগ্য আইনজীবী হতে গেলে কি কি করা উচিত, একজন আইনজীবী গড়তে বার ও বেঞ্চের ভূমিকা এসব নানা বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন।
তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত সাধারণ একজন মানুষ, সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছি। আমার অসাধারণ হওয়ার যোগ্যতা না থাকার কারণে আমি খুবই সাধারণ থাকি, এটা হয়তো অনেকে পছন্দ করেন কি না জানি না।
আপনারা অনেকেই বলে থাকেন যে, আমি সবকিছু টাইমলি (সময়মত) করি, আসলে আমি যাকে গুরু মনে করতাম তিনি হচ্ছেন জনাব মাহমুদুল ইসলাম সাহেব। আমি তার সাথে এসিস্টেন্ট এটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ করি। পরবর্তীতে তিনিই আমাকে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল করেছিলেন এবং আমি সর্ব কনিষ্ঠ ডেপুটি এটর্নি জেনারেল ছিলাম, স্যার নিজে সুপারিশ করে একটি আদেশ করিয়ে নিয়ে এসেছিলেন আমাকে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বানানোর জন্য। স্যার সবসময় বলতেন, কোর্ট বসার আগে কোর্টে উপস্থিত থাকতে হবে, মামলার বিষয়বস্তু দেখে নিতে হবে। মামলার নথি বাসায় পড়ার থেকে কোর্টে বসে পড়লে বেশি ক্লিয়ার হয়। আমিও সেটাই বিশ্বাস করি এবং যে কোন মামলার চুম্বক অংশ আমি পাশে দিয়ে লিখে রাখি।
আমি যখন আইন পেশায় নিয়োজিত হই তখন সিনিয়রগণ জুনিয়রদের সাহায্য করতেন, এখন হয়তো কাজের ভিড়ে সাহায্য করাটা সম্ভব হয় না। আমি যেহেতু অনেক সাহায্য পেয়েছি তাই আমি জুনিয়রদের সাহায্য করার চেষ্টা করি। একজন বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন ময়নুল হক সাহেব ছিলেন, আমি একদিন জজ কোর্টে একটা বিষয় নিয়ে একটু আটকে গিয়েছিলাম, স্যার আমাকে কিছু পরামর্শ দিলেন এবং সেই পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করে আমি সফল হলাম। আগের দিনে সবাই সবাইকে সাহায্য করতো কিন্তু এখন সময় স্বল্পতার কারণে হয়তো তা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
আমি সবাইকে একটা কথা বলবো, আমাদেও পরিচয় হলো আমরা আইনজীবী, আমরা পেশাজীবী মানুষ, আমরা যাতে পেশার উন্নয়ন করতে পারি সেজন্য কাজ করতে হবে। যেহেতু এখন বিজ্ঞ সিনিয়রের সংখ্যা অনেক কম এবং সিনিয়রগণ সময়ের অভাবে সাহায্য করতে পারছেন না, তাই আমরা যদি সিনিয়গণকে অনুরোধ করে কোন ওয়ার্কশপের আয়োজন করতে পারি, বিজ্ঞ বিচারকগণকে আনতে পারি এবং বিভিন্ন আইনগত বিষয়ে হাতে কলমে শিক্ষা ও নির্দেশনা দিতে পারি তাহলে আইনজীবীগণ সকলেই অনেক উপকৃত হবেন। এতে গোটা আইনজীবী সমাজ উপকৃত হবেন এবং বিচার ব্যবস্থা আরো সমৃদ্ধ হবে।
সুপ্রীম কোর্ট বারের আইনজীবীগণ যদি আমাকে আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন আমি কথা দিলাম এ সব বিষয় আমি মাথায় রাখবো। এছাড়া জুনিয়রদের মামলা করতে অনেক সময় ভোগান্তির শিকার হতে হয়, তারা অনেক সময় মামলা করতে পারে না। আমরা সিনিয়ররা গেলে আমাদের মামলা আগে হয় কিন্তু অনেক সময় তারা আর সেদিন হয়তো মামলাটি করতেও পারে না।
আমরা যদি মাননীয় প্রধান বিচারপতির সাথে আলাপ করে এমন কিছু করতে পারি যে, সপ্তাহে নির্দিষ্ট কোন একটা দিন ও সময় নির্ধারণ করতে পারি যে এই দিন এই সময় যারা আইন পেশায় দশ বছরের কম শুধু তাদের মামলা শোনা হবে তাহলেই দেখা যাবে জুনিয়ররা অনেক উপকৃত হচ্ছেন। আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে আমি অবশ্যই জুনিয়রদের জন্য এরকম একটি ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব। এছাড়া বারের সমসাময়িক নানা সমস্যা সমাধানকল্পে নিয়োজিত থাকার চেষ্টা করবো।
সুপ্রিম কোর্ট এর কর্ম পরিবেশ উন্নয়ন করা, সুপ্রিম কোর্ট বারকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা, বারে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া নিয়ে আসা, বিভিন্ন যুগান্তকারী মামলার রায়, বিভিন্ন জার্নাল, আইন বিষয়ক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মতামত এসব একটি অনলাইন প্লাটফর্ম এ নিয়ে আসার চেষ্টা করবো”।
এই অনুষ্ঠানে আসন্ন নির্বাচনে অন্যান্য বিভিন্ন পদপ্রার্থীসহ রুলার নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। আগামী ১৩ ও ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশন নির্বাচন।
Discussion about this post