বগুড়া প্রতিনিধি: দুদল সন্ত্রাসীর গোলাগুলিতে মারা গেলেন বগুড়া শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাফিদ আনাম স্বর্গ (২৫)। স্বর্গের বাবা শীর্ষ সন্ত্রাসী লিয়াকত আলী ২০০৬ সালে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। তার ছেলে স্বর্গ ছোটবেলা থেকেই বাবার পথ ধরেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।
পুলিশের ভাষ্য মতে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শহরের ধরমপুর এলাকায় ধুন্দল সেতুর দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে সুবিল খালের পাড়ে দুই দল সন্ত্রাসীর গোলাগুলির ঘটনায় স্বর্গ নিহত হয়েছেন।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে বগুড়া শহরের ধরমপুর ধুন্দল সেতুর দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে সুবিল খাল পাড়ে সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি চলছিল। শব্দ পেয়ে পুলিশের টহল দল সেখানে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখানে গুরুতর অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাশেই এক রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি ৭.৬২ ক্যালিবারের পিস্তল ও একটি বার্মিজ চাকু পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্বর্গের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর ও শাজাহানপুর থানায় হত্যা, অস্ত্র আইন, চাঁদাবাজিসহ সাতটি মামলা রয়েছে বলে জানান সনাতন চক্রবর্তী।
অভিযোগ রয়েছে, বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় প্রোগ্রেস কোচিং সেন্টারের মালিকানা নিয়ে বিরোধে ২০১১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের ভাগনে শরিকুল ইসলামকে হত্যা করেন স্বর্গ। এছাড়া, ২০১২ সালের ১২ জুন এলাকায় একটি বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে স্বর্গের চাচা সন্ত্রাসী আশরাফ আলীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় খুন হন সরকারি শাহ সুলতান কলেজের ছাত্র নিরঞ্জন চক্রবর্তী দীপু। এ মামলারও এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন স্বর্গ।
স্বর্গ প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পান। প্রভাবশালীরা তাকে হত্যার কাজে ব্যবহার করার জন্য জামিনে সহযোগিতা করে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল নববর্ষের রাতে বগুড়ার নিশিন্দারা উপশহরে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম শাহীন খুন হন। এই খুনের ঘটনায়ও স্বর্গ ভাড়াটিয়া খুনি হিসেবে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।




Discussion about this post