নিজস্ব প্রতিবেদক: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোনার আটপাড়া থানার সোহরাব ফকিরসহ দুই রাজাকারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সোহরাব ফকির ওরফে সোহরাব আলী ওরফে ছোরাপ আলী (৮৮) ছাড়া দণ্ডিত অপরজন হলেন শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকার হেদায়েত উল্লাহ ওরফে মো. হেদায়েতুল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি (৮০)।
আজ বুধবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আমীর হোসেন ও মো. আবু আহমেদ জমাদার।
শুরুর দিকে এই মামলার আসামি করা হয় তিনজনকে। তারা হলেন- শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকার হেদায়েত উল্লাহ ওরফে মো. হেদায়েতল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি, রাজাকার এনায়েত উল্লাহ ওরফে মঞ্জু এবং রাজাকার সোহরাব ফকির ওরফে সোহরাব আলী ওরফে ছোরাপ আলী।
২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি মাসে স্থানীয় শান্তি কমিটির সদস্য মো: হেদায়েতল্লাহ ওরফে আঞ্জু বিএসসি (৮০), এনায়েত উল্লাহ ওরফে মঞ্জু (৭০) ও রাজাকার সোহরাব ফকির ওরফে সোহরাব আলী (৮৮) বিরুদ্ধে ৬ ধরনের অভিযোগ আনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এই তিন আসামির মধ্যে আঞ্জু ও মঞ্জু দুই ভাই। এর মধ্যে ২০১৭ সালে ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মঞ্জুর।
এর আগে ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে সংবাদ সম্মেলন করে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনাল। এই মামলাটি তদন্ত করে মোহাম্মদ আমিনুর রশীদ। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ২৩ জন সাক্ষী দেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ৩ আসামির বাড়ি নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া থানার কুলশ্রীতে। তবে আঞ্জু পরিবার নিয়ে বসবাস করে রাজশাহী জেলার বোয়ালিয়া থানার হেতেম খাঁ মেথর পাড়ায়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা-আটক-নির্যাতন-অপহরণ-লুণ্ঠন-অগ্নিসংযোগ ও দেশত্যাগে বাধ্য করার মতো ৬ ধরনের অপরাধের অভিযোগ পায় ট্রাইব্যুনাল। নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া থানার মধুয়াখারী, মোবারকপুর, সুখারী গ্রাম ও মদন থানার মদন গ্রামে এই তিন আসামি এই সব অপরাধ করে বলে মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই তিন আসামিই একাত্তরে জামায়াতের কর্মী ছিল। তাদের মধ্যে আঞ্জু ও মঞ্জু দুই ভাই জামায়াতের রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট আছে, তা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।




Discussion about this post