নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে শাহবাগ থানা থেকে আদালতে নেওয়া হয়।
শাহবাগ থানার ওসি আবুল হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে, সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। ডিএমপি রমনা জোনের এডিসি আজিমুল হকের গাড়িতে করে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশি পাহারায় গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় থানার ওসি আবুল হাসানের কক্ষে। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু, এই তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়া ১৯ জুন আদালত এক আদেশে মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২৪ জুন তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
ডিআইজি মিজানের জামিন নামঞ্জুর; গ্রেফতারের নির্দেশ
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টে। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়েদুল হাসান ও বিচারপতি কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে জামিন আবেদনের শুনানি হয়। সেই বেঞ্চে ডিআইজি মিজানকে জামিন নামঞ্জুর করে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় আদালত।
আদালত জানায়, পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে ডিআইজি মিজানুর রহমান।
এর আগে গত ২৫ জুন রাতে তাকে বরখাস্ত করে পুলিশ অধিদফতরে সংযুক্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আদেশ জারি করা হয়।
তিন কোটি সাত লাখ টাকার সম্পদ গোপন এবং তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৪ জুন ডিআইজি মিজানসহ আরও তিনজনকে আসামি করে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার বাকি তিন আসামি হলেন- মিজানুর রহমানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মো. মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে মাহমুদুল হাসান। এ মামলার পরপরই আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারিতে এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে মিজানের বিরুদ্ধে। এরপর তাকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। মিজানুরের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে।
সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।
Discussion about this post