বরগুনা প্রতিনিধি: বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে । মামলাটি মাত্র প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। অপরাধকে আমরা অপরাধ হিসেবেই দেখবো। এর সঙ্গে যেই জড়িত থাকুন না কেন, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
আজ বুধবার (৩ জুলাই) সকাল ১০টায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতারের পর বরগুনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সেখানে গ্রেফতার হওয়া রিফাত ফরাজীকেও হাজির করা হয়। এ সময় বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তিসি বলেন, মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি গ্রেফতার আছে। এজাহারের বাইরেও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছি। তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি আছে। যার ফলে মামলায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। এজাহারের উল্লেখযোগ্য অংশই গ্রেফতার হয়েছে।
ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, রিফাত ফরাজীকে মঙ্গলবার (২ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে বরগুনা সদর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কীভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তদন্তের স্বার্থে তা বলা যাচ্ছে না। তাকে আজ আদালতে হাজির করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত রিফাত ফরাজীকে তেমন একটা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। পরে জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য পাওয়া যাবে, তা আপনাদের (সাংবাদিকদের) জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রিফাত সকালে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাকে কলেজে নিয়ে যান। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরো একদল যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। রিফাত শরিফকে এলোপাতাড়ি কোপানোর সময় তার স্ত্রী সন্ত্রাসীদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। একা এত জনের সাথে পেরে উঠছিলেন না আয়েশা। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করে।
বর্বরোচিত এই হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। স্বামীকে বাঁচানোর জন্য স্ত্রীর ছোটাছুটির ভিডিও দৃশ্য ছুঁয়ে যায় দেশবাসীর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও খুনিদের গ্রেফতার করতে নির্দেশ দেন।
এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডটি গুরুত্বের সাথে নেয় পুলিশ। আর রিফাত শরীফের হত্যায় জড়িতরা যেন দেশ ছাড়তে না পারে; সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকে পুলিশ। এই জন্য দেশের সকল বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ নৌ-বন্দরে নির্দেশনা পাঠানো হয়।
পরে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করে। গতকাল (মঙ্গলবার) পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড। আর ধরাছোঁয়ার বাহিরে ছিল দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী। তাদের মধ্যে রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। আর রিশানকে গ্রেফতারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।




Discussion about this post