ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কামরুন নাহার তূর্ণাকে হত্যা মামলায় তার স্বামী আরিফুল হক রনিকে (৩০) ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। ফাঁসিরদণ্ডপ্রাপ্ত রনি জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের আমিরুল হকের ছেলে। রনি ওই মামলার একমাত্র আসামি। তিনি পলাতক রয়েছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শফিউল আজম এ রায় দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতসূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের আমিরুল হকের ছেলে আরিফুল হক রনির সঙ্গে তার আপন চাচাতো বোন কামরুন নাহার তূর্ণার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। তবে বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে কলহ দেখা দেয়।
এ কলহের জেরে গত ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল দিবাগত রাত পরদিন সকালের কোনো একসময়ে তূর্ণাকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এর পর তার মরদেহ বাড়ির একটি পরিত্যক্ত পানির ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা হয়। হত্যার সময় তূর্ণা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল তূর্ণার স্বামী রনিকে আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন তার বাবা মফিজুল হক।
প্রথম দিকে আশুগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) ইদ্রিস মিয়া মামলাটির তদন্তকাজ শুরু করেন। এর পর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান আশুগঞ্জ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান।
পরে তার বদলিজনিত কারণে সর্বশেষ আশুগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি মো. বদরুল আলম তালুকদার মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এর মধ্যে রনি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ইতোপূর্বে রনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর পর তিনি জামিনে কারামুক্ত হয়ে গা ঢাকা দেন।
মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও জেলা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এসএম ইউসুফ। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. গিয়াসউদ্দিন চৌধুরীর এই রায়ের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুগঞ্জ থানা সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বর্তমানে কুমিল্লা জেলার লালমাই থানার ওসি মো. বদরুল আলম তালুকদার জানান, মামলাটি খুবই স্পর্শকাতর ছিল। কেননা ঘটনাটি একই পরিবারে। তারা সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাইবোন। আমরা তদন্তে হিমশিম খেয়েছি। তার পরও প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে আদালতে জমা দিয়েছি।
Discussion about this post