নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শৃঙ্খলা ফেরানো ও সড়ককে নিরাপদ রাখতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সভাপতি করে ২৬ সদস্যের একটি শক্তিশালী টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। টাস্কফোর্সে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডিএমপি, হাইওয়ে পুলিশ, বিআরটিএ, বিআরটিসিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সদস্য হিসেবে থাকবেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীস্থ বিআরটিএ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৭তম সভা শেষে তিনি এসব বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই টাস্কফোর্স কার্যক্রম শুরু করবে। বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ ও নিরাপদ সড়ক চাই এর প্রধান ইলিয়াস কাঞ্চনও টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে থাকবেন।
তিনি বলেন, আমরা সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারব না, এ কথা ঠিক নয়। আমরা ইতোমধ্যে সড়কে শৃঙ্খলা আইন বাস্তবায়ন করেছি। তাই আমরা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাবোই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে মহাসড়কে সার্ভিস লেন তৈরি করা হবে। চালকের জন্য বিশ্রামাগার তৈরির প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। এছাড়া বহুল প্রতিক্ষীত ঢাকা সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নতি করতে এডিবি (এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক) অর্থ দেবে।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশেরআইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল বুধবার জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৭তম সভা হয়েছে। সে সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে প্রধান করে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
পুলিশের আইজিপি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিববৃন্দ, ডিএমপি কমিশনার, উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী, বিআরটিএ ও বিআরটিসির প্রধান প্রকৌশলী, বিআরটিএ/ বিআরটিসির চেয়ারম্যান, ডিটিসিএ এর নির্বাহী পরিচালক, পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিনিধি, ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধি, মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি, মো. সামসুল হক, সৈয়দ আবুল মকসুদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, হাইওয়ে পুলিশ মহা পরিদর্শক, ব্যাক এর প্রতিনিধিরা সদস্য হিসেবে থাকবেন বলেও সভায় জানানো হয়েছিলো।
সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে কমিটিটা করে দেওয়া হয়েছে, আমাদের সড়ক পরিবহন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে, তাদের দাবি অনুযায়ী করণীয় আমরা সুনির্দিষ্ট করেছি। আমরা সড়ক পরিবহনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বসে আরও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমাদের কার্যক্রম শুরু করবো।
বৈঠকে সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে আইজিপি জাভেদ পাটোয়ারী বলেন, ১১১ সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হলে রাজউক ও বিআরটিএকে সংযোজন করতে হবে। স্কুল কলেজ বিশেষ করে ভিকারুন্নেসা, স্কলাস্টিকার মত স্কুলেরও পার্কিং এর কোন ব্যবস্থা নেই। যত্রতত্র পার্টি সেন্টার গড়ে উঠছে সেখানেও পার্কিং এর ব্যবস্থা রাখা হয় না। আমি বলবো, পার্কিং এর জায়গা ছাড়া যাতে কোন স্থাপনা করার অনুমোদন দেওয়া না হয়। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, এর কোন বিকল্প নেই।
ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সড়কে শৃঙ্খলার প্রথম সমস্যা হচ্ছে নিয়ম না মানার সংস্কৃতি। প্রতিবছর ৬০ কোটি টাকার মত জরিমানা আদায় হয়। পুলিশ সেবা খাত থেকে এখন রাজস্ব খাতের দিকে যাচ্ছে। বারবার জরিমানা করার পরও নিয়ম মানছে না। এমনকি দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও উল্টো পথে যেতে দ্বিধাবোধ করে না।
Discussion about this post