নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমি অনেককেই দেখি সারাদিন ফেসবুকে থাকে। ফেসবুকে আসক্তি হয়ে গেছে। এটা তাদের কাছে কোকেনের মতো। এই সোশ্যাল কোকেন থেকে আমাদের রক্ষা পেতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে মাদক সন্ত্রাস, শিশু নির্যাতন, ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে ও ইন্টারনেট সেলফোনের অপব্যবহার প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি কিশোরদের বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং বন্ধ করতে আমাদের পুলিশ কাজ করছে। আমরা অভিভাবকদের বলবো, আপনার সন্তানদের দিকে লক্ষ রাখুন। তারা যেন কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে না পড়ে। সন্ধ্যার পর কিশোররা কেন বাইরে থাকবে। হয় তারা পড়ার টেবিলে থাকবে, না হয় বাসায়।
তিনি বলেন, ‘আজকে আলোচ্য বিষয় ইভটিজিংয়ের কথা আসছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ইভটিজিং নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন। আমরা ইভটিজিং কমাতে পেরেছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, অভিভাবকরা ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডির এ বিষয় আরও কাজ করা উচিত। স্কুলের চারপাশের পরিবেশ ভালো রাখতে হবে। যদি কোনও কিশোর অপরাধ করেই থাকে, তাহলে কিশোর আইনে তাদের বিচার হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দশ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশ এক না। এখন পুলিশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত।
গত কয়েক বছরে সংগঠিত জঙ্গি হামলাগুলো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। দেশের উন্নয়নে অনেক রাষ্ট্রের চক্ষুশূল হয়েছি আমরা। তারা ঘাপটি মেরে আছে। দেশকে অকার্যকর করতে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
আলোচনা সভার বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমরা নিজেরাই শিশুদের মানুষ হওয়ার কথা বলছি না। আমরা বলছি জিপিএ-৫ পাও। শিশুরাও তাই ধারণা করে, জিপিএ-৫ পেলে জীবনে সব অর্জন হয়ে যাবে।
সাবেক আইজিপি ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. আব্দুর রউফ বলেন, এই সমাজ যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে আমাদের সন্তানরা কীভাবে বাঁচবে। তাই শেষ জীবনে এই সমাজটায় আরও কিছু অবদান রেখে যেতে চাই। যাতে মাদকমুক্ত সমাজ হয়।
সিআইডি প্রধান শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, আজকাল সন্তানরা অভিভাবক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষকদের কাজে আর বাস্তবে কোনও মিল দেখে না। অভিভাবকরা রাত জেগে ইন্টারনেটে পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্ন খোঁজেন। সেই প্রশ্ন তার সন্তানকে দেবেন, তা দিয়ে সন্তান জিপিএ-৫ পাবে। শিক্ষার্থীরা দেখছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি টাকা খেয়ে একজন অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে। তাহলে তারা কী নৈতিকতা শিখবে। সন্তান দেখছে, তার বাবার বেতনের সঙ্গে সম্পদের পার্থক্য। তার বাবা যে বেতন পায়, তাতে এত সম্পদ হওয়ার কথা না। কিন্তু তার বেতনের তুলনায় সম্পদ বেশি। তাহলে এই সন্তান তার বাবার কাছ থেকে কী শিখবে? এসব কারণেই অভিভাবক অনৈতিক হলে সন্তানের কাছে নৈতিকতা আশা করতে পারি না।
Discussion about this post