নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। এই সরকার দুর্নীতি, লুট, গুমসহ কোনও কুকর্মই বাদ দেয় নাই। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরোধী দল থেকে যে ধরনের নেতৃত্ব আসার কথা ছিল তা আসে নাই। আমরা সেই কারণে ক্ষুব্ধ। একটি সরকার দেশের ওপর অত্যাচার, অনাচার, অবিচার করে যাচ্ছে। আমরা প্রেস ক্লাবে বক্তব্য দেওয়া ছাড়া জনগণকে নিয়ে রাজপথ উত্তপ্ত করতে পারিনি।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আইনজীবী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মাহবুব বলেন, কটি নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করতে পারলাম না এই অবৈধ নির্বাচনের বিরুদ্ধে। এটা আমাদের ব্যর্থতা, আমাদের দুর্ভাগ্য।
তিনি বলেন, আইনজীবী সমাজ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে। এই অবৈধ সরকারের কোনও বৈধতা নাই। জনগণ তাদের ভোট দেয়নি। সাংবিধানিকভাবে তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই। আজকে এই সমাবেশ থেকে আমরা দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপর নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে বৈধ সরকার গঠন করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে জনগণকে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করবো সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত।
খন্দকার মাহবুব বলেন, নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য নীতিমালা করে বলা হয়- শৃঙ্খলাবিধিসহ সব ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হলো। ‘সাক্ষী গোপাল’ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন নেওয়া হয়। সে কারণে আজ নিম্ন আদালতে টেলিফোনের ওপরে বিচার হয়, জামিন হয়। এই সরকার বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে।
এমন দাবি করে তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় নয় প্রতিহিংসার রাজনীতির কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে। আজকে রাজপথ উত্তপ্ত করে সরকারকে বাধ্য করতে হবে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় তিনি একজন অসুস্থ মহিলা, চলাফেরা করতে পারেন না। বলেছিলাম তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক, কিন্তু সেই চিকিৎসাও তিনি পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়া যদি আমাদের মধ্যে থেকে চলে যান তাহলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিলুপ্ত হবে। তাই গণতন্ত্রের স্বার্থে, মানবাধিকারের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। সরকারকে আমরা বলতে চাই, যদি অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে অরাজক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের চেয়ারপারসন মিথ্যা মামলায় কারাগারে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই অনেক ক্ষেত্রে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পারলে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন বানচাল করে নতুন নির্বাচনের দাবি করতে পারতাম। আমাদের দুর্ভাগ্য, সেটা আমরা পারি নাই। সারা বাংলাদেশে আমাদের জাতীয়তাবাদী শক্তি উজ্জীবিত আছে, হাজার হাজার কর্মী আছে। তাদের নিয়ে আমরা মাঠে নামবো।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
Discussion about this post