ডেস্ক রিপোর্ট: মালয়েশিয়ায় করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধ এবং এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে দেশটিতে থাকা অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন বাংলাদেশি যুবক রাহয়ান কবির। আল-জাজিরার ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়া লকডডাউন’ শিরোনামে ২৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি প্রতিবেদনে করোনায় অবৈধ অভিবাসীদের সাথে কেমন আচরণ করা হচ্ছে তা নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার (০৭ জুলাই) মালয়েশিয়ার জাতীয় বার্তা সংস্থা বারনামা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর মালয়েশিয়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মালয়েশিয়া সরকার বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করে এবং আল-জাজিরাকে প্রমাণ উপস্থাপনের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি সাক্ষাতকার দেওয়া মালয়েশিয়া প্রবাসী ওই যুবক রায়হান কবিরকে খোঁজার জন্য স্থানীয় গণমাধ্যমসহ মালয়েশিয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসিয়াল পেজে সাধারণ জনগণের সহোযোগিতা কামনা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ৩ জুলাই আল-জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর থেকে দেশটির স্থানীয় নাগরিকও কঠোর সমালোচনা করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়া সরকার মুভমেন্ট কনট্রোল অর্ডারে (এমসিও) মাধ্যমে দেশটিতে অবৈধ প্রবাসীরা মহামারি করোনাকালীন বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন।
দেশটির পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, আন্তর্জাতিক নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে যে, মালয়েশিয়া অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে আর এরই প্রেক্ষিতে পিডিআরএম (মালয়েশিয়া রয়েল পুলিশ) এই বিষয়ে আরও তদন্তে নেমেছে।
এদিকে, দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দাতুক সেরি ইসমাইল সাবরি বিন ইয়াকুব আল জাজিরাকে মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগকে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। এছাড়াও ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রকাশ করার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরাকে মালয়েশিয়ার কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান।
অভিবাসন বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে রায়হান কবিরের ছবি, বয়স, তার পাসপোর্ট নম্বর, দেশের নাম ও বর্তমান কুয়ালালামপুরে অবস্থানের ঠিকানা সংযুক্ত করে তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এ ঘটনার পর মালয়েশিয়ায় বসবাসরত লাখ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসীদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, রায়হান মালয়েশিয়া ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাদের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করার পর মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের একটি অংশের প্রস্তাবিত সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি। তার বিরুদ্ধে এর আগে বাংলাদেশি অপহরণ করার অভিযোগে মামলা হয়েছে এবং একাধিকবার মালয়েশিয়ায় জেল খেটেছেন।
Discussion about this post