ফ্রন্ট লাইনার মানে যারা সরাসরি করোনা মোকাবেলা করছেন । নিজের সন্তান ,বাবা মা ,ছেলে মেয়ে রেখে যেতে হচ্ছে সেবা দান করতে কিন্তু সেবাই ধর্ম মেনে তাঁরা এই মহান কাজে ব্রত হয়েছেন । সরকার ফ্রন্ট লাইনারদের জন্য অনেক সুবিধা দিয়েছেন সেটা পরোক্ষ ,কারণ মানুষের নিজের জীবনের চেয়ে বড় কিছু ত নাই । কয়জন অকাতরে জীবন দিতে পারেন ! ইতোমধ্যে অনেক ডাক্তার পুলিস সহ যারা যারা এই মহান কাজ করছেন তাঁরা অনেকের করোনার কাছে হার মেনেছেন .পরিণতি অকাল প্রয়াণ । আজ এই লিখায় তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি ও শ্রদ্ধা জানাই ।
গতকাল আমাদের আইন অঙ্গনের আইনজীবী ডক্টর এনামুল হক করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করেছেন । সুপ্রিমকোর্ট বার থেকে যেসব হসপিটাল আইনজীবীদের জন্য নির্ধারিত ছিল তার মধ্যে একটি হলও হোলি ফ্যামিলি হসপিটাল । যারা সেখানে যাচ্ছেন তাঁরা সর্বপ্রথম ভাবছেন কত টাকা তাঁরা খরচ করতে পারবেন । কিছুটা ফ্রি সেবা পাচ্ছেন এই হসপিটাল এ । তাই এনাম ও সেখানে ভর্তি ছিলেন । সুপ্রিমকোর্ট বার এর নির্বাচনে সে ট্রেজারার প্রার্থী ছিল । খুব নিকট অতীত তাই সবার ই মনে আছে তাকে । আমার মনে পরছে জজ কোর্ট এ প্রার্থী পরিচিতির সময় কি রকম উদগ্রীব ছিল পরিচিত হওয়ার জন্য । হেরে গেল মন খারাপ না করে আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল ,বলেছিল সামনে আবার জিতব আপা।
কারও একজনের লেখা পড়লাম । তেমন সচ্ছল ছিল না এনাম । কিভাবে চলবে তার দুইটা বাচ্চা সহ পরিবার । আইনজীবীদের ত আর চাকরি না যে মৃত্যুর পর পরিবার কিছুটা টাকা পেয়ে সচ্ছলতার সাথে দিনানিপাত করবে বা বাচ্চা কাচ্চাদের মানুষ করবে । আছে শুধু বেনভলেন্ত এর ৫/৬ লাখ টাকা ।কিন্তু সে টাকা ত আর এমন মহামারি দুর্যোগ আসবে ভেবে পরিকল্পনায় ছিল না । মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যু হবে এবং মৃত্যুর পরে আইনজীবীরা তাদের বেনিভলেন্ত ফান্ডের টাকা পাবে এটাই নিয়ম । কিন্তু করোনায় মৃত্যু ত আর স্বাভাবিক মৃত্যু নয় …চোখের সামনে প্রতিটা দিন একজন না একজন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে , কেউ সেরে উঠছে কেউ ফিরছে না …।৪/৫ মাস কোর্ট বন্ধ তার উপর চিকিৎসার ব্যয় ,মানুষের নাভিশ্বাস । কি হবে বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ ।
করোনায় ডক্টর এনামুল হতে পারে আমাদের দৃষ্টান্ত ।এনামুলের অকাল মৃত্যু আমাদের অন্তর্দৃষ্টি প্রসারিত করেছে যে আইনজীবীরা অনেক খানি ই অরক্ষিত । দেশের অন্যান্য পেশার মত আইনজীবীরা সার্বক্ষণিক সেবা দান করে আসছে , ডাক্তার বা পুলিস বা সেনাবাহিনী র মত করে না হলেও মানুষের অধিকার প্রতিস্থায় বিচার প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করে চলেছে অবিরাম ..আমাদের উপার্জিত আয়ের থেকে ট্যাক্স বাবদ সহকারের তহবিলে যায় মোটা অংকের টাকা যা উল্লেখ করার মতো । সেই তুলনায় আইনজীবীরা অবহেলিত । নিজের জমান টাকা র বাইরে কিছুই নেই তাদের ।
আইনজীবীরা তাদের কষ্টার্জিত উপার্জন ভোগ করে বয়স বাড়লে কিন্তু জুনিয়র থাকা অবস্থায় দিনরাত কাজ করে শেষ জীবনে সচ্ছলতার মুখ দেখে আইনজীবীরা । করোনা কালীন প্রত্যেক দিন দেশের অন্যান্যদের মতো আইনজীবীরা অকাল মৃত্যুবরন করছে ,
আগে জানতাম অন্যান্য পেশার তুলনায় আইনজীবীরা সচ্ছল কারণ স্বাধীন পেশা ,কার ও মুখাপেক্ষী হতে হয় না ,কিন্তু করোনা কালীন মহামারিতে দেখা যাচ্ছে আইনজীবীরা কিছুটা অবহেলিত । কিছুটা সহযোগিতা আইনজীবীরা ত পেতেই পারে । আসলে কে বাধবে বেড়ালের গলায় ঘণ্টা। ……কিছু কিছু ঘটনা মানুষের চেতনার জন্ম দেয় তেমন ই এনাম একটি মৃত্যু নয় …এনাম একটি চেতনা ……..
Discussion about this post