দুই শিশু রাজন-রাকিবসহ চাঞ্চল্যকর তিন হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য সোমবার হাইকোর্টে পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতির নির্দেশের পরই তিনটি মামলা বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মোহম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চের সোমবারের (৩১ অক্টোবর) কার্যতালিকায় মামলাগুলো ৫,৬ ও ৭ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।
হত্যা মামলাগুলো হলো-সিলেটের শিশু রাজন হত্যা, খুলনায় শিশু রাকিব হত্যা এবং ঢাকায় পুলিশের বিশেষ শাখার (রাজনৈতিক) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা। গত ১২ জুলাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই তিনটি মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
গত বছর এই তিনটি মামলার ডেথ রেফারেন্সের নথি হাইকোর্টে আসার পরই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেন। ঐ নির্দেশের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মামলার পেপারবুক প্রস্তুতের উদ্যোগ গ্রহণ করে। দ্রুতই পেপারবুক তৈরি করা হয়। প্রস্তুত হওয়া রাজন হত্যা মামলার পেপারবুক ৭০৬ পৃষ্ঠা সম্বলিত। রাকিবের পেপারবুক ৪৩৫ পৃষ্ঠা এবং পুলিশ দম্পতি মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলার পেপারবুক ৭২০ পৃষ্ঠার বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
২০১৩ সালের ১৬ অাগস্ট পুলিশের বিশেষ শাখার (রাজনৈতিক) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয় তাদেরই মেয়ে ঐশী রহমানকে। গত ১২ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালত ঐশীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
এদিকে গত বছরের ৮ জুলাই চুরির অপবাদে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন শেখপাড়ায় নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকার বাদেয়ালি গ্রামের সবজি বিক্রেতা শিশু রাজনকে (১৪)। রাজনকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছাড়ে নির্যাতনকারীরা। ওই ভিডিও চিত্র প্রচারের পর দেশবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কিন্তু রাজন হত্যার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম ঘটনার পরই দ্রুত বিদেশে পালিয়ে যায়। ইন্টারপোলের মাধ্যমে গত ১৫ অক্টোবর সৌদি আরব থেকে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনে পুলিশ।
অপরদিকে গত ৩ আগস্ট বিকেলে খুলনার টুটপাড়ায় শরীফ মোটরস নামের এক মোটরসাইকেলের গ্যারেজে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় শিশু রাকিবকে। এ ঘটনায় দায়ের করা হয় পৃথক পৃথক হত্যা মামলা। রাজনের ১৪ কার্যদিবস এবং ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রাকিব হত্যার বিচার শেষ করে আদালত। গত ৮ নভেম্বর বিচারের রায়ে প্রধান আসামি কামরুল ও শরীফসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।
রায় ঘোষণার পর নভেম্বর মাসে তিনটি মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে পাঠায় বিচারিক আদালত। ডেথ রেফারেন্সের নথি আসার পরেই প্রধান বিচারপতি সংশ্লিষ্ট শাখাকে পেপারবুক প্রস্তুতের নির্দেশ দেন।
Discussion about this post