গাজীপুরে অটোরিকশা ছিনতাই ও চালক খুনের মামলায় এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে ১০ হাজার টাকা জারিমানা করাসহ অপর একটি ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। রবিবার সকালে গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক ওই দণ্ডাদেশ দেন।
দণ্ডিত নাঈম ওরফে মহিউদ্দিন নাঈম (২৭), গাজীপুর মহানগরের চত্তর (এটিআই গেইট) এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে। এছাড়া দোষ প্রমাণ না হওয়ায় এজহারভুক্ত অপর তিন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, গাজীপুর মহানগরের চতর বাজার এলাকার (নয়াপাড়া) ইদ্রিস আলীর ছেলে হাসান ইমাম ওরফে রাব্বী (২৪), একই এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের ছেলে জহিরুল ইসলাম ওরফে ফরহাদ (২৩) ও রেজাউল করিম মৃধার ছেলে রায়হান উদ্দিন ওরফে নীরব (২১)।
গাজীপুর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হারিছ উদ্দিন আহম্মদ জানান, স্থানীয় চুন্নু মোল্লার ছেলে জুলহাস মোল্লা কিস্তিতে এলাকায় অটোরিকশা চালাতেন। ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার সময় অটোরিকশা নিয়ে জুলহাস বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে স্থানীয়রা ওইদিন সন্ধ্যা ৭টায় গাজীপুর মহানগরের হাতিয়াব নোয়াইলের টেক এলাকার গজারী বনে জুলহাসের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে জয়দেবপুর থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এলাকাবাসীর কাছে নিহতের বাবা জানতে পারেন নাঈম ও তার তিন সঙ্গী ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর দুপুরে চতর বাজার থেকে যাত্রী সেজে জুলহাসের অটোরিকশায় করে হাতিয়াব খিলপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাতিয়াব জঙ্গলে তার লাশ পাওয়া যায়। তবে তার অটো ও মোবাইল ফোনটির কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে পরদিন চুন্নু মোল্লা বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় ওই চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলাটি তদন্তের জন্য জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নির্দেশে ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল আলম ও গাজীপুর জেলা গেয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ হাসান আংশিক তদন্ত করেন। পরে মামলার তদন্তভার সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। পরে সিআইডির পরিদর্শক খোন্দকার জাহাঙ্গীর কবীর দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরে আদালত সাত জনের স্বাক্ষ্য শেষে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন জনকে মামলা থেকে খালাস ও নাঈমকে মৃত্যুদণ্ড, অর্থদণ্ডসহ তিন বছর কারাদণ্ডের রায় দেন। এ সময় নাঈম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে হারিছ উদ্দিন আহম্মদ এবং আসামি পক্ষে আতাউর রহমান, গাজী পারভেজ আলম ও মাহমুদা সিদ্দিকা মামলাটি পরিচালনা করেন।
Discussion about this post