ভারতের একটি আদালত অদ্ভুত এক যুক্তি দিয়ে ২৩ বছরের এক তরুণীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলা খারিজ করে দিয়েছে। ধর্ষণের শিকার তরুণীর অভিযোগ শুনে আদালতের যুক্তি, একা কোনো ব্যক্তির পক্ষে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা সম্ভব? যার ফলে মুম্বাই হাইকোর্ট ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করে দেয়।
এর আগে নিম্ন আদালত ওই মামলায় অভিযুক্ত সমীর যাদবকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। পরে মামলাটি হাইকোর্টে গেলে বিচারপতি অনন্ত বাদার ১৫ হাজার টাকা মুচলেকায় সই করিয়ে দণ্ডিতের জামিন মঞ্জুর করেন।
আদেশে বিচারপতি বলেন, বাদী আদালতকে বিশ্বাস করাতে চাইছিলেন, অভিযুক্ত তার মুখে রুমাল বেঁধে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়।
‘এর পর নিজে সেই গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গিয়ে একটি হোটেলের কক্ষে তাকে ধর্ষণ করে। কিন্তু কোনো একজন পুরুষের পক্ষে কি কোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে এ ভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা কি সম্ভব?’ প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিচারপতি আরও বলেন, ‘অভিযোগকারী জানিয়েছেন- মুখে রুমাল বাঁধা থাকলেও তার হাত বাঁধা ছিল না। অভিযুক্ত যদি নিজেই গাড়ি চালাতে ব্যস্ত থাকেন তা হলে উনি নিজে হাত খোলা থাকা সত্ত্বেও কিছু করতে পারলেন না কেন?’
আদালতের যুক্তি, বাদীর বক্তব্য অনুযায়ী বাধা দেয়ার কোনো প্রমাণও স্পষ্ট নয়। উপরন্তু, ঘটনার ১১ মাস পর কেন তিনি এফআইআর করলেন? এ অভিযোগ কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ১১ জুন সকালে শিরোন্দায় বোনের বাড়ি থেকে ফিরছিলেন ওই তরুণী। ওই সময় অভিযুক্ত যাদব রাস্তার পাশ থেকে তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। এর পর একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ২০১৫ সালের মে মাসে থানায় অভিযোগ জানান তিনি।
ওই তরুণীর দায়ের করা ওই মামলার ভিত্তিতে অভিযুক্তকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল মুম্বাইয়ের এক দায়রা আদালত। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে সমীর।
অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, তার মক্কেল ও বাদীর সম্মতিতেই শারীরিক সম্পর্কে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ে জামিন পায় নিম্ন আদালতে দণ্ডিত সমীর।
Discussion about this post