নিজস্ব প্রতিবেদক: ফৌজদারি অপরাধ করলেও সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করা যাবেনা। গ্রেফতারের আগে অনুমতির বিধান রেখে সংসদে আইনও পাস হয়েছে।
বুধবার সংসদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ নামে বিলটি উত্থাপন করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইনমত আরা সাদেক প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
আইনে সরকারি কর্মচারীদের ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনের দায়ে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
আইনে সরকারকে, সরকারি গেজেট আদেশ দ্বারা প্রজাতন্ত্রের যে কোনো কর্ম বা কর্ম বিভাগ সৃজন, সংযুক্তকরণ, একীকরণ, বিলুপ্তিকরণসহ অন্য যে কোনোভাবে পুনর্গঠন করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জারিকৃত আদেশ দ্বারা নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীর কর্মের শর্তাবলির তারতম্য বা রদ করা যাবে।
এমনকি আদেশের ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা প্রদান করা যাবে। এছাড়া প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিতদের নিয়োগ ও কর্ম সম্পর্কিত যে কোনো শর্ত নির্ধারণ করতে পারবে। একইসঙ্গে চাকরির দায় ও এখতিয়ার নির্ধারণ ও পরিবর্তন করতে এবং জনস্বার্থে আইনানুগ যে কোনো কর্মে বা দায়িত্বে নিয়োজিত করতে পারবে।
আইনের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন বিষয়ে বলা হয়েছে, এই আইনের আওতাভুক্ত কোনো কর্ম বা কর্ম বিভাগে সরাসরি জনবল নিয়োগের ভিত্তি হবে মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা। তবে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯(৩) এর উদ্দেশ্য পূরণ কল্পে পদ সংরক্ষণ-সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
পদোন্নতরি ভিত্তি হবে, সততা, মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা, প্রশিক্ষণ ও সন্তোষজনক চাকরি। সরকারি চাকরির শিক্ষানবিশকাল ও চাকরি স্থায়ীকরণ সম্পর্কিত বিষয় ও শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে। এছাড়া আইনে কোনো বিদেশি নাগরিককে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত করা যাবে না মর্মে বিধান রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, আউট সোর্সিয়ের মাধ্যমে সেবা গ্রহণকে কোন অর্থেই প্রজাতন্ত্রেও কর্মে নিয়োগ বলে গণ্য করা যাবে না।
আইনের ৩২ অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের লঘু ও গুরুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। লঘু শাস্তির মধ্যে রয়েছে, তিরস্কার, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন স্থগিত, বেতন স্কেলের নিম্নধাপে অবনতি এবং সরকারি আদেশ অমান্য বা কর্তব্যে ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে সরকারি অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি সংঘটিত হলে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়। গুরুদণ্ডের মধ্যে রয়েছে, নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন স্কেলের অবনতিকরণ, বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান, অপসারণ ও চাকরি হতে বরখাস্ত করা হবে।
Discussion about this post