বখাটে বদরুল আলমের (২৬) চাপাতির কোপে আহত কলেজ ছাত্রী খাদিজা আকতার নার্গিস অবস্থা আশঙ্কাজনক। এখনও লাইফ সাপোর্টে জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমন এই নৃশংসতার নিন্দায় ঝড় ওঠেছে, তেমনি সোচ্চার হয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরাও।
তবে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর নার্গিসের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেয়ে বরং নিজেদের প্রচারণার জন্যের জন্যই সেখানে যাচ্ছেন কিছু মানুষ।
এরইমধ্যে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি), বিএনপির মহাসচিব থেকে শুরু করে অনেক মানবাধিকার কর্মীও পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে গিয়েছেন।
নার্গিস ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রয়েছেন- জেনেও অনেকেই জ্ঞানহীন অবস্থায় থাকা নার্গিসকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) দেখতে ঢুকছেন, সঙ্গে লোক নিয়ে যেয়ে ছবি তুলেছেন নিজের।
হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ মানুষ হাসপাতালের লবির পর ভেতরে প্রবেশ করতে হলে রোগী ভর্তি থাকতে হয় এবং ভিজিটর কার্ড লাগে। তবে অনেক সময় প্রভাবশালী আর রাজনীতিবিদরা এসব নিয়ম মানতে চান না, জোর করেই ভেতরে প্রবেশ করেন তারা।
বুধবার বিকেলে হাসপাতালে নার্গিসকে দেখতে যেয়ে সেলফি তুলে ও তা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন সংরক্ষিত আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) সাবিনা আক্তার তুহিন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি অপু উকিল এবং যুগ্ম সম্পাদক কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি।
মুমূর্ষু রোগীর সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তিন নারীর এ সেলফিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার লিখেছেন, ‘আইসিইউতে খাদিজার সাথে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের নেত্রীদের সেলফি… আসুন আমরা লজ্জায় মরে যাই।’
নার্গিসের চাচা আব্দুল কুদ্দুস বুধবার রাতে বাংলানিউজকে বলেন, অনেকেই আসেন দেখতে, এসে ছবি তুলেন। আমাদের সান্ত্বনা দিয়ে নিচে যেয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন।
‘নিয়মানুযায়ী আইসিইউতে প্রবেশ করা যায় না। কিন্তু প্রভাবশালীরা তা মানেন না।’
সন্ধ্যায় লেখক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ আইসিইউ থেকে বের হয়ে আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে ছবিও তুলেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
Discussion about this post