অপরাধ দমনে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বিকল্প উপায় বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তিনি বলেন, কেবল পানিশমেন্ট (শাস্তি) দিয়ে অপরাধ দমন করা যাবে না।
অপরাধ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও বিচার বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্রাইম অ্যান্ড জাস্টিস স্টাডিজ’ এর প্রথম বার্ষিক সভা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শনিবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, আজকের পৃথিবীতে সময়ের সঙ্গে অপরাধের ধরনের পরিবর্তন ঘটছে। তাই অপরাধ দমন বা মোকাবেলা করতে হলে অপরাধের কারণগুলো খুঁজে বের করে সে বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত গবেষণায় জোর দিতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে নতুন নতুন যেসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে সেটিকে অপরাধ তত্ত্ব হিসেবে ধরে নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত গবেষাণা প্রয়োজন। আইন প্রয়োগ বা বিচারের পাশাপাশি অপরাধের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণগুলো খুঁজে বের করে এর উপশম ঘটাতে হবে।
আনিসুল হক বলেন, ‘আদালতে ২৭ লাখ মামলা জটে আছে। কিন্তু অপরাধ বসে থাকবে না। অপরাধ বাড়লে মামলার সংখ্যাও বাড়বে। আমরা দেখেছি শত শত বছর ধরে শাস্তি দিয়েও অপরাধ দমানো যায়নি, যাচ্ছে না। আজকের পৃথিবীতে নতুন নতুন অপরাধ দেখছি, যা এক সময় চিন্তায়ও আসতো না।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পরিবার হচ্ছে শিক্ষার মূল কাঠামো। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মূল্যবোধ তৈরি করতো। কিন্তু এখন পরিবার-সমাজের যোগসূত্রগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। চেইন অব কমান্ড ভেঙে যাচ্ছে। ফলে অপরাধের মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। একে সমুন্নত করতে হবে। নয়তো সহিংসতা, অপরাধ দমন বা প্রতিহত করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা উদাহরণ টেনে অভিনব সাইবার অপরাধের বিষয়টি তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সাইবার অপরাধ বলে নতুন একটি অপরাধের সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য অভিনব আইন তৈরি করা প্রয়োজন।’
তবে সাইবার অপরাধ দমনে দেশীয় আইন ও বিচার কাঠামোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক যোগসূত্রতাও গড়ে তোলার প্রতি জোড় দেন তিনি।
মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবার, সমাজ-সংস্কৃতি থেকে একজন ব্যক্তি অপরাধ বা সহিংসপ্রবণ হয়ে ওঠে। তাই এর বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা প্রয়োজন। অপরাধ বর্তমান বিশ্ব তথা বাংলাদেশে একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। অপরাধ দমনই নয়, একইসঙ্গে অপরাধের কারণ, ধরন-প্রকৃতি বিশ্লেষণ, বিভিন্ন তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে অপরাধ সংঘটনের ব্যাখ্যা খুঁজে বের করতে হবে। অপরাধের মাত্রা বাড়ার পাচঁটি ধাপও তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারপারসন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মোকাররম হোসাইন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ভেলদোস্তা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান মিয়া ও সাউথ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমান।
Discussion about this post