নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর লালমাটিয়া থেকে অপহৃত কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা পারভেজ হোসেন সরকারকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অপহরণের ১১ ঘণ্টা পর শুক্রবার রাত সোয়া ১২টায় রাজধানীর পূর্বাচল (৩০০ ফিট রোড) থেকে তিনি তার পরিবারকে ফোন দেন। পরবর্তীতে তার পরিবার ও পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দীন মীর জানান, তাকে কে বা কারা ৩০০ ফিট রোডে ফেলে গেছে বলে শুনেছি। উদ্ধারের পর মোহাম্মদপুর থানায় আনা হচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে দু’জন লোক টেনেহিঁচড়ে একটি কালো মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় পারভেজকে। সে দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়।
পারভেজ সরকার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ আসন (তিতাস-হোমনা) থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। বর্তমানে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তিনি। তিনি ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন।
পারভেজের খালাতো ভাই ফাহাদ মোহাম্মদ জানিয়েছিলেন, লালমাটিয়ার মিনার মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে তিনি নিজ বাসার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় একজনের সাথে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করেন। এরপরই একটি কালো রঙের জিপ গাড়ি আসে এবং দুইজন মিলে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। গাড়ির ভেতরেও দুইজন ছিল। তাদের সবার হাতে পিস্তল ও ওয়াকিটকি ছিল।
ঘটনাটি দ্রুত মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করেন। সেখানে দেখা গেছে, একটি কালো রঙের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ-১৪-২৫৭৭) বাসার সামনে এসে থামে এবং দুইজন লোক জোর করে পারভেজকে ওই গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
পারভেজের পরিবার জানায়, তিতাসের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল শিকদারের সাথে অনেক দিন ধরেই রাজনৈতিক ঝামেলা চলছে পারভেজের। ওই এলাকায় প্রটোকল ছাড়া পারভেজ কখনো যাতায়াত করতেন না। গত বছর ওই এলাকায় সোহেলের লোকজন পারভেজের ওপর হামলা করেছিল।
জানা গেছে, লালমাটিয়া ‘সি’ ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৩০ নম্বর বাড়িতে দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন পারভেজ। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিতাসের উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ (তিতাস ও হোমনা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। পারভেজ বর্তমানে কুমিল্লা উত্তরের সভাপতি।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর বলেছিলেন, লালমাটিয়া থেকে পারভেজ হোসেন সরকার নামে এক ব্যক্তিকে তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
Discussion about this post