সাইফুল, পটিয়া থেকে: অবশেষে সানোয়ার হোসেন চাকরিও পেয়েছেন। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার তাঁকে ব্যাংকের ‘ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার’ পদে নিয়োগপত্র দিয়েছে। এ ছাড়া চাকরিতে যোগদানের প্রস্তুতির জন্য এস আলম গ্রুপ তাঁকে এক লাখ টাকা দিয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র সানোয়ারকে নিয়ে গত ১৭ এপ্রিল প্রথম আলোর শেষ পৃষ্ঠায় ‘রিকশা চালিয়ে পড়ালেখা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাঁর এখন মাস্টার্সের পরীক্ষা চলছে। কিন্তু টাকার অভাবে সানোয়ারের ফরম পূরণ আটকে গিয়েছিল। সানোয়ারের বিষয়টি জানার পর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পটিয়ার প্রাণ মো. সাইফুল আলম তাঁকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ঢাকায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী বৃহস্পতিবার সানোয়ারের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। একই সময় এস আলম গ্রুপের জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক কাজী সালাহ্উদ্দিন আহাম্মদ ও উপমহাব্যবস্থাপক উৎপল মজুমদার কোম্পানির পক্ষ থেকে সানোয়ারের হাতে এক লাখ টাকা তুলে দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ব্যাংকের নির্বাহী সহসভাপতি একরাম উল্লাহ, বিপণন ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান আজম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে সানোয়ার হোসেন কান্না চেপে রাখতে পারেননি। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার জন্য সানোয়ারকে পরামর্শ দেন। সানোয়ারের বাড়ি দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদার গ্রামে। বাবার নাম আমিনুল হক। গ্রামের বাজারে তাঁদের একটি ছোট্ট চায়ের দোকান আছে। আড়াই বিঘা আবাদি জমি ছিল, ছেলেকে পড়াতে গিয়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় তা বন্ধক রাখতে হয়। এ ছাড়া চারটি এনজিও থেকে নেওয়া ঋণ ১ লাখ ১১ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ায় সপ্তাহে তিন হাজার টাকা কিস্তি পরিশোধ করতে হতো। এই ঋণ পরিশোধের জন্য প্রথম আলো সানোয়ারের পরিবারকে এক লাখ টাকা দিয়েছে। এ ছাড়া প্রথম আলোর পাঠকেরা তাঁর পড়ার খরচ হিসেবে ৬৮ হাজার টাকা দিয়েছেন, যা আগেই তাঁকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
Discussion about this post