স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর মুখ খুলেছেন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ হোসেন। এসময় দপ্তরবিহীন এই মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি লাভের জন্য রাজনীতি করি না।’
শনিবার বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে ‘ঢাকাস্থ হোসেনপুর উপজলো সমিতি’ আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি রাজনীতি নিয়ে কথা বললেন। এর আগে ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও মন্ত্রিত্ব বা রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা বলেননি।
এসময় তিনি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমার পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেঈমানি করেন নাই। আমি মন্ত্রী হই বা না হই, রাজনীতি করি বা না করি, সব সময় হোসেনপুরবাসীর সঙ্গে থাকব।’
গত ৯ জুলাই স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সৈয়দ আশরাফকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। আর এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে।
মন্ত্রণালয় হারানোর দিনই সন্ধ্যায় যুবলীগের ইফতার পার্টিতে উপস্থিত হন তিনি। সেখানে তিনি কোনো কথা বলেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নেরও কোনো জবাব দেননি। দুই দিন পর তিনি রাজনীতি নিয়ে কথা বললেন।
এরও আগে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সৈয়দ আশরাফকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ এলেও তিনি বলেন, ‘গুজবে কান দিবেন না।’
এদিকে সৈয়দ আশরাফের ঘনিষ্টজনরা মনে করছেন, দপ্তরবিহীন মন্ত্রীর পদ থেকেও সরে যেতে পারেন তিনি। এমন কী দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও সরে যাচ্ছেন তিনি। দলের পদ থেকে সরে যেতে তিনি এর আগেই সভাপতিকে জানিয়েছেন। আর সেজন্য তিনি যোগ্য সাধারণ সম্পাদক খোঁজার অনুরোধও করেছেন তিনি।
আগামী ১৫ জুলাই সৈয়দ আশরাফ স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে লন্ডন যাচ্ছেন। আর তাঁর এবারের লন্ডন যাত্রা নিয়ে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করেন, এবার তিনি লম্বা সময়ের জন্য লন্ডনে থাকতে পারেন। দেশের রাজনীতিতে আর ফিরছেন না আশরাফ, এমন আশঙ্কাও করছেন তারা।
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সাংসদ আশরাফ ছাত্রজীবনে ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জেলখানায় তাঁর পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর লন্ডনে চলে যান আশরাফ। তাঁর স্ত্রী সন্তানরা এখনো লন্ডনেই বসবাস করছেন। সেখানেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হন সৈয়দ আশরাফ। ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২০০৯ সালে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ওয়ান ইলেভেনের পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তাঁকে দেওয়া হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। পাঁচ বছর ওই মন্ত্রণালয় চালানোর পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন শেষে তাঁকে ফের একই মন্ত্রণালয় দেয়া হয়।”প্রিয়
Discussion about this post