কুবি প্রতিনিধিঃ অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কক্ষ দখল করে কার্যালয় খোলা, গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণসহ বেশ কিছু অভিযোগ তুলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০১৭ থেকে পদত্যাগ করেছে এক তৃতীয়াংশ নেতা।
বুধবার সকালে সমিতির সভাপতি বরাবর দেওয়া প্রত্যেকের স্বাক্ষর সম্বলিত এক আবেদনপত্রে তারা নিজেদের পদত্যাগের বিষয়টি অবহিত করেন।
পদত্যাগকারী কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন, সহ-সভাপতি মো: মঈন উদ্দিন ইলাহী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম জুবায়ের ও দপ্তর সম্পাদক মাহফুজ কিশোর।
পদত্যাগ পত্রে তারা উল্লেখ করেন, ‘‘সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল’ স্লোগান ধারণ করে, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপনের প্রেষণা ও সংবাদকর্মীদের মধ্যে পেশাগত ঐক্য ও সৌহার্দ্য বজায় রাখার আদর্শ ও উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা করে এই সমিতি। কিন্তু, সময়ের পরিক্রমায় বর্তমানে সাংবাদিক সমিতি সেই আদর্শ ও উদ্দেশ্যের ছায়াতলে নেই বলে আমরা মনে করছি। আমরা সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও গত ১ বছর ধরে কোনও দায়িত্ব পালনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি বরং বিভিন্ন সময়ে উপেক্ষিত হয়েছি নানাভাবে।’
তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘সাবেক উপাচার্যের (অধ্যাপক ড. মো: আলী আশরাফ) সময়কালে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শ্রেণিকক্ষ (প্রশাসনিক ভবনের ১০১ নং কক্ষ) সাংবাদিক সমিতির নামে অবৈধভাবে দখল ও অদ্যাবধি ব্যবহার, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে যখন-তখন সভা আহ্বান, বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইস্যুতে বস্তুনিষ্ঠতা উপেক্ষা করে সংবাদ বর্জন, সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের কর্মরত পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেলেও গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে তাঁকে স্ব-পদে বহাল রাখা, সমিতির আজীবন সদস্যপদ থেকে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে একজনকে স্থগিতাদেশ প্রদান, গঠনতন্ত্রের নিয়মের বাইরে নতুন সদস্যপদ প্রদান, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা স্বত্ত্বেও নতুন সদস্যপদ না দেওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। তাই আমরা সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ ও সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’
এ বিষয়ে সমিতির দপ্তর সম্পাদক মাহফুজ কিশোর জানান, ‘আমি সমিতির নির্বাচিত দপ্তর সম্পাদক। অথচ গত এক বছর ধরে সমিতির গঠনতন্ত্রে উল্লেখিত কোনও ধরনের কার্যক্রম পালন করতে আমাকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এছাড়াও সমিতি গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী বিভিন্ন ধরনের কাজ করছে যা আমাকে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জায়গা থেকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।’
সমিতির সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম জুবায়ের জানান, ‘বিভিন্ন সময় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপেক্ষা করা, সমিতির বিভিন্ন কার্যক্রম অবহিত না করা ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে কাজ করায় আমি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি।’
জানতে চাইলে সহ-সভাপতি মো: মঈন উদ্দিন ইলাহী বলেন, ‘আমি সমিতির সহ-সভাপতি ও ক্যাম্পাসের সিনিয়র সাংবাদিক। সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আমি সমিতির সাথে যুক্ত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসের নানা কার্যক্রমে সমিতি আমাকে অবহিত করছেনা। এছাড়াও সমিতির গঠনতন্ত্রের সাথে সাংঘর্ষিক কার্যক্রম আমাকে সমিতি থেকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।’
Discussion about this post