বিডি ল নিউজঃ
ঢাকার আশপাশে ২৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অবৈধ গ্যাস বিতরণ লাইন শনাক্ত করেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্রে জানা যায়, বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংযোগ যখন বন্ধ ছিল তখন ১ লাখ ৬৫ হাজার সংযোগ অবৈধভাবে দেওয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন এর বাইরেও অসংখ্য অবৈধ গ্রাহক রয়েছে। আর অবৈধ এই গ্যাস সংযোগ নিতে সহায়তা করছেন তিতাসের জোনাল কর্মকর্তা, ঠিকাদার ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে অবৈধ সংযোগ দিয়ে তা বৈধ করে দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। আবার কিছু এলাকায় জোর করে অবৈধ সংযোগ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে নিরীহ মানুষ যারা টাকা দিয়ে গ্যাসের লাইন নিয়েছেন তারা হচ্ছেন অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেওয়ার অপরাধে মামলার আসামি। অন্যদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নাম ভাঙিয়ে যেসব রাজনৈতিক নেতা-কর্মী লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এখন অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে প্রায়ই হামলার শিকার হচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নরসিংদীর ভাটপাড়ায় ৫ নভেম্বর অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাসহ একদল লোকের হামলার শিকার হন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও সাংবাদিক। ফেব্রুয়ারিতে গাজীপুরের পুবাইলে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে নির্বাহী হাকিমসহ তিতাস কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করেন এলাকাবাসী। এ সময় তারা লাঠিসোটা নিয়ে অভিযানকারীদের বিরুদ্ধে চড়াও হন এবং ইট, গাছের গুঁড়ি ফেলে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। তাদের মারধর করে জব্দ করা ৯৫টি গ্যাসলাইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তিতাসের এক ঠিকাদার সাবেক ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে পুবাইলের কয়েক শ বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেন। প্রসঙ্গত, গ্যাস সংকটের কারণে ২০০৯ সালের জুলাই থেকে শিল্প কারখানা এবং ২০১০ সালের জুলাই থেকে বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংযোগ বন্ধ রাখে সরকার। কিন্তু এ সময় নতুন গড়ে ওঠা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে ঠিকই অবৈধভাবে নতুন সংযোগ নেওয়া হয়েছে। এ সুযোগে তিতাসের জোনাল কর্মকর্তা ও ঠিকাদাররা অবৈধ গ্যাস সংযোগের রমরমা বাণিজ্য শুরু করেছেন।
Discussion about this post