রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই ৯টি শিশুকে আটক ও কারাগারে পাঠানো কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মোহাম্মদপুর থানার ৯ অসহায় শিশুকে আটকের ক্ষেত্রে শিশু আইন ২০১৩ এর ১৩, ১৪, ৪৪ ও ৫২ ধারা এবং আইনগত সহায়তা প্রদান আইনের ৯ এবং ১১ ধারা বিধান লঙ্ঘন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আজ রবিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, সিএমএম কোর্ট, পুলিশের আইজিপি, ডিএমপি কমিশনারসহ আটজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আজ আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
আব্দুল হালিম জানান, গত ২৭ মে ‘ওরা ক্ষুধার্ত ওরা নির্যাতিত’ নামে ৯টি অসহায় শিশুকে আটক করা নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সিসিবি ফাউন্ডেশন বিবাদীদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আইনি নোটিশের কোনো জবাব না দেয়ায় সিসিবি ফাউন্ডেশন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আজ সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ৯টি শিশুকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই আটক করে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ। কিন্তু তাদের কাউকে আদালতের বিচারকের সামনে তোলা হয়নি। সকাল থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তাদের রাখা হয় হাজতখানায়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আদালত পুলিশ মোহাম্মদপুর থানার দেয়া প্রতিবেদন সিএমএম আদালতে উপস্থাপন করে। আদালত শিশুদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মাধ্যমে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে সন্ধ্যার দিকে শিশুদের প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালতে জমা দেয়া প্রতিবেদনে মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক নয়ন মিয়া বলেছেন, এরা কিশোর অপরাধী। এরা মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া টাউন হল, মোহাম্মাদীয়া হাউজিংসহ আবাসিক এলাকায় গ্রিল কেটে চুরি করে থাকে। বুধবার রাত ১২টা ৩০ মিনিটে এলাকাবাসী তাদের আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। এসব কিশোর অপরাধীর কোনো আত্মীয়স্বজন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Discussion about this post