আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সাকিব আল হাসান বল হাতে তেমন আলো ছড়াতে পারেননি। ধীরে ধীরে নিজেকে থিতু করেছেন; ব্যাট ও বল হাতে নিজেকে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নাসিরও কি সাকিবের দেখানো পথেই হাঁটছেন, অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন? না, তেমন কোনো চেষ্টা বা ইচ্ছে নেই নাসিরের। অলরাউন্ডার হতে চান না তিনি। মঙ্গলবার মিডিয়াকর্মীদের এমনটাই জানিয়েছেন নাসির।
সাকিব-নাসির দু’জনের কেউই নিজ নিজ অভিষেক ম্যাচে উইকেট পাননি। সাকিব অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচেই ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম উইকেটের মুখ দেখেছেন। সাকিব তার ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ ম্যাচের মধ্যে ৪ বারই উইকেটশূন্য ছিলেন। ওই ১০ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১১টি।
নাসিরের পরিসংখ্যানও অনেকটা এমনই। প্রথম ১০ ম্যাচে তিনি ৬ বারই উইকেটশূন্য। ক্যারিয়ারের সপ্তম ম্যাচে এসে প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট পেয়েছেন তিনি, ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডজ বিপক্ষে।
ম্যাচে সাকিব নিয়মিত বল করার সুযোগ পেলেও সুযোগ পান না নাসির হোসেন। এরপরও দু’জনের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বোলিংয়ের চিত্রে কিছুটা মিল থাকায় সাকিবের মতো অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে নাসিরের। তবে নাসির অলরাউন্ডার হতে চান না।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হিসেব সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন নাসির হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি বলতে পারছি না, অলরাউন্ডার হতে পারব কিনা। আমি সব সময়ই চেষ্টা করি দল আমার কাছে যেমনটা চায় তেমনটা দেওয়ার। অলরাউন্ডার হতে হবে এমন কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই আমার। বোলিংয়ের দায়িত্ব দিলে বোলিং আর ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব দিলে ব্যাটিং করার চেষ্টা করি আমি।’
২০১৪ সালে ব্যাট না হাসায় বছরের শেষ দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত সিরিজ থেকে বাদ পড়েছিলেন নাসির। এরপর প্রিমিয়ার লিগে দারুণ পারফরম্যান্স করে আবার দলে ফিরেছেন তিনি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের মাঝখানে কি বোলিং নিয়ে আলাদা কাজ করে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়েছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আত্মবিশ্বাস আমার আগে থেকেই ছিল। জাতীয় দলে রিয়াদ ভাই ছাড়াও অন্য অনেকে বোলিং করে; সেই কারণে হয়তো বল হাতে সুযোগ হয়নি। এরপরও আমি প্রিমিয়ার লিগে কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে ১০ ওভার করে বোলিং করি।’
আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করতে অধিনায়ক মাশরাফির ভূমিকা কতটুকু? এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘মাশরাফি ভাই আমাকে আগেও বলতেন, এখনও বলেন যে আমাকে করতে হবে। যখন বোলিং করব তখন যেন আমি একজন পার্ট-টাইম বোলার তেমনটা না ভাবি। যখন বোলিং করব তখন যেন চিন্তা করি যে আমি দলের প্রধান বোলার। এমন প্রেরণা সব সময় আত্মবিশ্বাস যোগায়।’
ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শেখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলির মতো গুরুত্বপূর্ণ দু’টি উইকেট নিয়েছেন নাসির হোসেন। এর মধ্যে বিরাট কোহলির উইকেটটি কতটুকু ভাল লাগার, এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘এটা বড় ব্যাপার নয়। একটা ভাল বল বিশ্বের যত ভাল ব্যাটসম্যানই হোক না কেন, তার জন্য কঠিনই। উইকেট পাওয়ার পর সবচেয়ে ভাল লেগেছিল দলের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ব্রেকথ্রু এনে দিতে পারায়।’-দ্য রিপোর্ট২৪
Discussion about this post