বিডি ল নিউজঃ
মর্কেলকে নিয়ে বাদশা। মঙ্গলবার শাহরুখের পার্টিতে। ছবি: টুইটার।
টিম-১, সন্ধের ওয়াংখেড়ে, কলকাতা নাইট রাইডার্স
প্রেসবক্সের কাচটা আর একটু হলেই যাচ্ছিল! দড়াম করে একটা আওয়াজ আর তাতে মিডিয়া-জমায়েতের অস্ফুট আর্তনাদ থামলে বোঝা গেল, ঠিকই আছে। মাঠে এখন পেশিবহুল ক্যারিবিয়ানের ‘সি দ্য বল, হিট দ্য বল’ চলছে! পরেরটা গেল আরও উঁচুতে, চলে গেল সোজা উঁচু গ্যালারির চেয়ারে। আন্দ্রে রাসেলের বিক্রম দেখে এতটাই উল্লসিত হয়ে পড়লেন গৌতম গম্ভীর যে, কেকেআর ক্যাপ্টেনকে দেখা গেল পাশের নেটে ব্যাটিং-ফ্যাটিং ছেড়ে হাততালি দিচ্ছেন!
দেখে কে বলবে, টিম মালিকদের ইডি ডেকে পাঠিয়েছে? আজই?
টিম-২, রাতের ওয়াংখেড়ে, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
রিকি পন্টিং এখনও এতটুকু পাল্টাননি। মৃত্যুর আগে হার নয়—অস্ট্রেলীয়-দর্শন থেকে সরে আসেননি এক চুলও। প্রেস কনফারেন্স রুমে ঢুকে পরিচিত চোখ ছোট করে তীক্ষ্ণ সব উত্তর, বিপক্ষকে বাক্যের ছুরিকাঘাতে টুকরো-টুকরো করে ফেলা। শোনা গেল, টানা পাঁচ জয়ের নেপথ্যে যতটা কৃতিত্ব প্লেয়ারদের, ততটাই নাকি পন্টিংয়ের। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক নিজের কাঠিন্যটা টিমের মজ্জায় ঢুকিয়ে দেওয়ার পরই নাকি টিমটার এমন প্রত্যাবর্তন। কায়রন পোলার্ডের দানবীয় নেট-সেশন ছেড়ে দিন, পন্টিংয়ের কথাবার্তা কানে ঢুকলেও যে কোনও পরাক্রমী প্রতিপক্ষের বুক কাঁপবে। চাপ যত বাড়ে, তাঁর টিমের খেলা তত খোলে। কেকেআর যেন জেনে রাখে, মুম্বই ম্যাচটায় নামবে সব কিছু বাজি রেখে।
দেখে কে বলবে, টিমটার কাছে প্রত্যেক ম্যাচ মানে এখন নকআউট? রিকি পন্টিং তো ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছেন!
দু’টো টিম, একটা ম্যাচ, দু’টো পয়েন্ট, ভিন্ন চাপ এবং প্লে অফ স্বপ্ন। কেকেআরের যদি পড়ে থাকা দু’টোর মধ্যে একটায় জয় লাগে, মুম্বইয়ের লাগবে দু’টোয় দু’টো। কেকেআর যদি আচমকা আক্রান্ত হয় শেয়ার-সংক্রান্ত ঝামেলায়, তা হলে মুম্বই বন্দি মরণবাঁচনের বৃত্তে।
মিল আরও একটায় জায়গায়। দু’টো টিমের কেউই পরিস্থিতির প্রেশার বাইরের পৃথিবীকে বুঝতে দিচ্ছে না।
কেকেআরের ওয়াংখেড়ে স্মৃতি এমনিতে সুখের নয়। আইপিএলে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে পনেরো ম্যাচে তারা জিতেছে পাঁচটা, হেরেছে দশ। আর ওয়াংখেড়েতে হিসেবটা এ রকম: মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৪ : কেকেআর ১। অর্থাৎ, ওয়াংখেড়ে কেকেআরের কাছে ঐতিহাসিক ভাবে অ-সুখের। কিন্তু তার পরেও বলা যাবে না, চাপের গন্ধমাদন নিয়ে তারা ঘুরছে। প্লে-অফ নিশ্চিত করার চাপ যে আছে, সেটা মেনে নিয়েও টিম বলছে, চাপ মুম্বইয়ের উপরও আছে। আরও বেশি আছে। কেকেআর একটা হারলেও প্লে-অফ লড়াইয়ে থাকবে। কিন্তু মুম্বই হারলেই প্রায় শেষ। টিম মালিক সংক্রান্ত কোনও রকম প্রশ্নের উত্তর কেকেআর ম্যানেজমেন্ট দিতে চাইছে না। তবে পরোক্ষে এটাও বুঝিয়ে রাখছে যে, ও সবের বিন্দুমাত্র প্রভাব ক্রিকেট মাঠে পড়বে না। আর অতীত? সেটা অতীতই। বর্তমান নয়।
ওয়াংখেড়ের প্রায় পাটা উইকেট দেখেও তাই নাইট শিবিরে কম্পন নেই। স্পিন-নির্ভর নাইট বোলিংয়ের তাতে হবে কি না শুনে আক্রম বলে দিলেন, তাঁর টিমের বোলিংয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি, বৈচিত্র। শুধু স্পিন নয়, ভাল পেসারেরও অভাব নেই নাইট সংসারে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স যে নিজেদের মাঠে প্রায় অপ্রতিরোধ্য, প্লে-অফ অঙ্ক যে এখনও ওলটপালট হয়ে যেতে পারে, সে সব শুনে ওয়াসিম বললেন, “হ্যাঁ, এ বার আইপিএলটা বেশ ইন্টারেস্টিং হচ্ছে, তাই না?”
মহাযুদ্ধের প্রাক্ লগ্নে কেকেআরের যদি কোনও সমস্যা থেকে থাকে, সেটা সুখীর সমস্যা। কাকে বাদ দিয়ে কাকে খেলাবে, তার সমস্যা। সাকিব না মর্কেল? প্র্যাকটিস সূচক হলে হয়তো মর্কেল। কিন্তু সাকিব খেললে মিডল অর্ডার আরও শক্তিশালী হবে। তা হলে বসবেন কে? রাসেল—তিনি ছাড়া কেকেআর মানে রোনাল্ডো ছাড়া রিয়াল মাদ্রিদ। নারিন? আগের ম্যাচে চার উইকেট আছে। ব্র্যাড হগ? প্রসঙ্গটাই হাস্যকর ঠেকবে।
মুম্বই সেখানে আবর্তিত একটা প্রশ্নে। কেকেআরের বিরুদ্ধে উগ্র খিদেটা বেরোবে তো? মুম্বই নিশ্চিত বেরোবে, চাপই বার করবে।
কোথাও গিয়ে তাই মনে হবে, দুই যুযুধানকে ব্যাখ্যা করার মতো উপমা ক্রিকেট মাঠ নয়, খোঁজা উচিত পদার্থ বিজ্ঞানের বইয়ে। কারণ মুম্বই যদি অদম্য গতি হয়, তা হলে কেকেআরও অনড় বস্তু। আর সম্মুখসমর, সেখানে কে জিতবে?
উত্তরটা ওয়াংখেড়ে বাইশ গজে। আজ রাত আটটা থেকে।
হারল বেঙ্গালুরু
সংবাদ সংস্থা • চণ্ডীগড়
বৃষ্টিবিঘ্নিত ১০ ওভারের ম্যাচে কিঙ্গস ইলেভেন পঞ্জাব ২২ রানে হারাল আরসিবি-কে। বুধবার চণ্ডীগড়ে পঞ্জাবের ১০৬-৬ তাড়া করতে নেমে আরসিবি থেমে যায় ৮৪-৬। ১২ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবলে পাঁচ নম্বরে এখন বিরাট কোহলিরা। এ দিকে, সব কিছু ঠিকঠাক চললে কেভিন পিটারসেন রবিবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের শেষ লিগ ম্যাচে মাঠে নামবেন। জানিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজির সিইও এ সন্মুগন। ওই ম্যাচেই সানরাইজার্সের প্লে অফে যাওয়া বা না যাওয়া নির্ভর করতে পারে।
সৌজন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা
Discussion about this post