আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনের নির্বাচন বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে ওই নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য (এমপি) পদে থাকতে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের কোনো প্রকার আইনি বাধা নেই।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে হেফজুল বারী নামে এক ব্যক্তির করা আপিল আবেদন খারিজ করে বৃহস্পতিবার জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন। বাদীপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
পরে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের আইনজীবী জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য বর্তমান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সংসদ সদস্য পদ বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে আনিসুল হকের সংসদ সদস্য পদ বৈধই থাকলো।
আইনমন্ত্রীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন জানান, ওই আসনে জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) প্রার্থী হিসেবে খন্দকার হেফজুর রহমান ওরফে হেফজুল বারীর নির্বাচন বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই রায় দেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বর্তমান আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এ নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন হেফজুর রহমান। কিন্তু তথ্য গোপনের অভিযোগে তার প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। ফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আনিসুল হক। এ অবস্থায় তার প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন হেফজুর রহমান।
এ আবেদনে বলা হয়, আনিসুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান আইন উপদেষ্টা ছিলেন। মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময়ও তিনি ওই পদে ছিলেন। লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি সরকারের আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করেছেন। প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে থাকা কোনো ব্যক্তি সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রার্থী হতে পারেন না। তাই সরকারি সুবিধা নিয়ে তিনি (আনিসুল হক) নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না। এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ওই বছরের ১৫ মে আবেদনটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এর ২৬৯ দিন পর আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে (লিভ টু আপিল) আবেদন করেন হেফজুর রহমান। এ আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এ এম আমিন উদ্দিন আরও জানান, হাইকোর্টের রায়ের পর ২৬৯ দিন তামাদি হওয়ার পরও (রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সময়সীমা অতিবাহিত হওয়ার পর) লিভ টু আপিল আবেদন করে বাদীপক্ষে কোনো আইনজীবীও উপস্থিত থাকেননি। এ অবস্থায় আপিল বিভাগ আবেদন খারিজ করে দেন।
Discussion about this post