বিডিলনিউজঃ বর্তমান সরকারের বহু প্রতীক্ষিত গ্রামীণ ব্যাংক আইনটি অবশেষে পাস হল। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রোববার গ্রামীণ ব্যাংক বিলে সই করেছেন। তাহলে রাষ্ট্রপতির এই স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আইনে পরিণত হলো ‘গ্রামীণ ব্যাংক বিল-২০১৩’, যার ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ক্ষদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী এ প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা তৈরি হলো।
গত মঙ্গলবার গ্রামীণ ব্যাংক বিল সংসদে পাস হয়, যার সমালোচনা করে ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে ‘পরম গৌরবের’ একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘ধ্বংসের দিকে’ ঠেলে দেয়া হলো।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও বলছে, গ্রামীণ ব্যাংককে ‘ধ্বংস করতে’ সরকার আইন সংশোধন করেছে।
এই আইনে গ্রামীণ ব্যাংকের অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়ে আইনভঙ্গের জন্য শাস্তির মেয়াদ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সামরিক শাসনামলে নেয়া বিভিন্ন অধ্যাদেশ পরিবর্তন ও বাতিলের কাজ শুরু করে। এরই আওতায় ১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ বতিল করে নতুন এই আইন করা হলো। আগে গ্রামীণ ব্যাংক কেবল সরকারকে আর্থিক প্রতিবেদন দিত। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ায় সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংককেও আর্থিক প্রতিবেদন দিতে হবে তাদের।
এর মধ্য দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে বলে ইউনূসের অভিযোগ। এ আইনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সর্বোচ্চ ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত চাকরিতে থাকতে পারবেন। ব্যাংকের বাছাই করা তিন থেকে পাঁচ জনের প্যানেল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিযুক্ত হবেন। আর পরিচালকদের মেয়াদ হবে তিন বছর। ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের সূচনা হওয়ার পর থেকেই এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস। ২০০৬ সালে তিনি ও গ্রামীণ ব্যাংক দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে শান্তিতে অবদানের জন্য জন্য নোবেল পুরস্কার পান। অবসরের বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালের মার্চে ইউনূসকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আদালতে গিয়ে হেরে ইউনূস পদত্যাগ করেন। সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংক আইন ছাড়াও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট বিল ২০১৩; পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিল ২০১৩; ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) বিল ২০১৩, এশিয়ান রি-ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন বিল ২০১৩, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বিল ২০১৩ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) বিল ২০১৩ তে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি।
Discussion about this post