বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সম্পর্কে কথা বলার মত উচ্চতায় আমি এখনো আসীন হই নাই। এ লেখাটা একান্তই আমার অনুরোধ।।
আইনের জগতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে যে শুধু বিজ্ঞ আইনজীবী তৈরী হয়, তা নয়। মহামান্য আপীল বিভাগের সকল মাননীয় বিচারপতি এখান থেকেই আইনের সেবা শুরু করেছেন। অধঃস্তন আদালতের বিচারকগন অনেকেই বার কাউন্সিল সদস্য হওয়ার পর বিচার বিভাগে যোগদান করেছেন। বিচার বিভাগে চাকুরী শেষ করে অনেকেই আবার এখানে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের সনদের জন্য আসেন। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের প্রায় সকল মাননীয় বিচারপতি বার কাউন্সিল হয়ে যাত্রা শুরু করেছেন। তাই এই প্রতিষ্ঠান অনেক গুরুত্ব বহন করে।।
আইন শিক্ষাব্যবস্থায় বর্তমানে কোন পরিকল্পনা বা শৃংখলা নেই। বিস্তারিত বলছিনা। তবে অনেক ভাল ছাত্র অনেক ভাল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অনেক ভাল ভাল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয় এবং ভাল লেখাপড়া শিখে আসে। অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ভাল লেখাপড়া হয়। আমি বলছি – শৃংখলা নেই। এই যায়গায় বার কাউন্সিল নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে। বার কাউন্সিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাথে বৈঠক করতে পারে। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করতে পারে। মাননীয় আইনমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথেতো এখন বার কাউন্সিলের সুসম্পর্ক রয়েছে। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় কতজন আইনের ছাত্র ভর্তি করবেন, কোন কোন প্রতিষ্ঠান পড়াবেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কিভাবে আইন শিক্ষা হবে, কতজন হবে, তা বার কাউন্সিল নির্ধারণ করে দিতে পারেন। আইন শিক্ষার সিলেবাস নির্ধারণ করে দিতে পারেন। ক্যারিকুলাম নির্ধারণ করে দিতে পারেন। শিক্ষাপদ্ধতি নির্ধারণ করে দিতে পারেন। পরীক্ষা পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিতে পারেন। প্রয়োজনে একজন এক্সটারনাল পাঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আইন শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। আইন শিক্ষা সমৃদ্ধ হলে এবং uniform হলে আমরা উত্তম বিচারক পাব এবং উত্তম আইনজীবী পাব। বার কাউন্সিল যদি চায়, তাহলে এখন থেকে চেষ্টা শুরু করলে আগামী জানুয়ারি থেকেই বার কাউন্সিল এই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে পারে। এমনকি আইন শিক্ষায় ভর্তির বয়সও নির্ধারণ করতে পারে। তাতে মেধাবীর পাশাপাশি অযোগ্যদের আইনপেশায় ঢুকে পড়ার সুযোগ কমে যাবে, এমনকি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। আইন পড়ে ডিগ্রী নিয়ে চলে আসলে তাকেতো আটকানো সহজ নয়। যা করার শিক্ষাব্যবস্থার শুরুর পর্যায়ে অর্থাৎ ভর্তির পর্যায়েই করতে হবে। মেডিকেল শিক্ষার মত।।
যে লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, তা কি পদ্ধতিতে নিবেন, করোনা বাস্তবতায় বিজ্ঞ জেলা জজ এবং সংশ্লিষ্ট বার কে ব্যবহার করে জেলায় জেলায় নেয়া যায় কিনা, তা ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি। এটা আমার একটা অনুরোধ মাত্র। আর অনুরোধতো আমরা আপনাদেরই করবো।।
আর একটা কথা বলবো। যারা ২০১৭ সালে এমসিকিউ পাশ করেছে, কিন্তু লিখিত পরীক্ষা পাশ করতে পারেনি, আমরা জানতে পেরেছি বার কাউন্সিল একটা পত্র দিয়ে বলেছিল, তাদের পুনরায় এমসিকিউ দিতে হবেনা। এখন নাকি তাদেরকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বারিত করা হচ্ছে। যদি কোথাও কোন সংশোধনী লাগে, বা অনুমতি লাগে, তাহলে সেই ব্যবস্থা করে আপনারা তাদের প্রতি সহানুভূতি করবেন এই অনুরোধ করছি।।
শুধু একটা উদাহরণ দিচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার একটি ভাই ২০১৪ সালের পরীক্ষায় ২০১৫ সালে পাশ করে জুডিশিয়ারি বা অন্য ক্যাডারে না যেয়ে আইনজীবী হতে আসে। এখনো আইনজীবী হতে পারেনি। সেও ২০১৭ সালে এমসিকিউ পাশ করা। এবার এমসিকিউ দেয় নাই। সে যদি লিখিত পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়, তবে সে কবে আর আইনজীবী হবে। এরকম আরো অনেকে আছে। তাদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার জন্য আমার বিনীত অনুরোধ।।
Discussion about this post