বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সিপিএ নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম সম্মেলনের আয়োজন বাংলাদেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সংসদ ও সহযোগী সংস্থা থেকে আগত প্রতিনিধিদের এ মিলনমেলা বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করেছে।’
রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তজার্তিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ রোববার (২ এপ্রিল) আইপিইউ এসেম্বলিতে আগত থাইল্যান্ড, পোল্যান্ড এবং মঙ্গোলিয়ার ডেলিগেশন প্রধানরা ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেছেন।
ডেলিগেশন প্রধানরা স্পিকারের সাথে সাক্ষাৎকালে ১৩৬তম আইপিইউ এসেম্বলি, বাংলাদেশের সংসদীয় কার্যক্রম, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করেন।
শিরীন শারমিন চৌধুরী আরো বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আইপিইউ এসেম্বলির মতো বৃহৎ আয়োজন করতে পেরে গর্বিত।’
এসেম্বলিকালীন প্রতিনিধি দলের প্রত্যেক সদস্য ইভেন্টগুলো উপভোগ করবে এবং এসেম্বলি কার্যক্রমে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
থাইল্যান্ড ন্যাশনাল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রতিনিধি দলের প্রধান সুরাচি লিয়েনবুনলার্টচাই এর সাথে সাক্ষাৎকালে স্পিকার বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের মানুষের কল্যাণে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এর ফলে আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নতি লাভ করছে। বাংলাদেশে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এখন দৃশ্যমান।’
শিরীন শারমিন চৌধুরী বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আমন্ত্রন জানান এবং পাটজাত দ্রব্য, তৈরি পোশাক শিল্প, বিদ্যুত জ্বালানি ও চামড়া শিল্পে পিপিপি ও বিওটি পদ্ধতিতে বিনিয়োগের আহবান জানান।
সাক্ষাৎকালে তারা দু’দেশের সংবিধান নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করেন। এ সময় থাইল্যান্ড প্রতিনিধি দলের প্রধান থাইল্যান্ডের নতুন সংবিধান প্রণয়নের বিষয়টি স্পিকারকে অবহিত করে বলেছেন, ‘থাইল্যান্ড বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু এবং উন্নয়ন অংশীদার।’
স্পিকার বাংলাদেশের সংবিধানকে বিশ্বের অনন্য সংবিধান উল্লেখ করে বলেছেন, ‘থাইল্যান্ড নতুন সংবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানকে অনুসরণ করতে পারে।’
পোল্যান্ড প্রতিনিধি দলের প্রধান এলজবিয়েটা ক্রুক-এর সাথে সাক্ষাৎকালে স্পিকার বলেছেন, ‘পোল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রফতানিকারক দেশ।’
তিনি পাটজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য ও ঔষধ বাংলাদেশ থেকে আমদানির আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে একশতটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে।’
স্পিকার পোল্যান্ডের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহবান জানান।
পোল্যান্ড প্রতিনিধিদলের প্রধান বলেছেন, ‘১৩৬তম আইপিইউ এসেম্বলি বাংলাদেশ অত্যন্ত সুন্দরভাবে আয়োজন করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ইউরোপের মধ্যে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে পোল্যান্ড বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।’
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পরবর্তী নির্বাচনে পোল্যান্ড একমাত্র প্রার্থী। এ ক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশের সমর্থন কামনা করেন।
এ সময় স্পিকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছেন। বাংলাদেশের জনসমষ্টির সিংহভাগ তথা শতকরা ৬৫ ভাগই তরুণ সমাজ। এ জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
মঙ্গোলিয়া ডেলিগেশন হেড ও মঙ্গোলিয়া পার্লামেন্ট এর চেয়ারম্যান মাইয়েগম্বো এংখ্বোল্ড স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর এর সাথে সাক্ষাৎকালে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সাথে মঙ্গোলিয়ার সম্পর্ক অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ।
স্পিকার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
মঙ্গোলিয়া ডেলিগেশন প্রধান বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়া সংসদীয় প্রতিনিধি পর্যায়ে সম্পর্কোন্নয়ন, সাংস্কৃতিকভাব বিনিময় ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে একত্রে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
Discussion about this post