বিডি ল নিউজঃ মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
আজহারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ ৬টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এরমধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ২, ৩ ও ৪ নং অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ৫ নং অভিযোগে তাকে ২৫ বছর জেল ও ৬ নং অভিযোগে ৫ বছরের জেল দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ১ নং অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে রংপুর অঞ্চলে ১২শ ২৫ ব্যক্তিকে গণহত্যা, ৪ জনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও নির্যাতন এবং শতশত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ- এই ছয়টি অভিযোগ আনা হয়।
আজহারের বিরুদ্ধে ছয় অভিযোগ: এ টি এম আজহারের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগের মধ্যে গণহত্যার অভিযোগ দুটি। অভিযোগ গঠনের আদেশ অনুসারে, একাত্তরের ১৭ এপ্রিল রংপুরের ঝাড়ুয়ার বিল এলাকায় পাকিস্তানি সেনা ও সহযোগী বাহিনীর সদস্যরা নির্বিচারে গুলি করে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে। একাত্তরের ৩০ এপ্রিল রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষক কালাচান রায়, সুনীল বরণ চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ অধিকারী, চিত্তরঞ্জন রায় ও কালাচান রায়ের স্ত্রী মঞ্জুশ্রী রায়কে বাসা থেকে অপহরণের পর দমদমা সেতুর কাছে নিয়ে হত্যা করা হয়। এ দুটি ঘটনায় আজহারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ গঠন করা হয়।
বাকি চারটি অভিযোগ হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন প্রভৃতি মানবতাবিরোধী অপরাধের। এই অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ২৪ মার্চ রংপুরের আইনজীবী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মাহফুজ আলীসহ ১১ জনকে অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের পর ৩ এপ্রিল দখিগঞ্জ শ্মশানে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। ১৬ এপ্রিল রংপুরের বদরগঞ্জের ধাপপাড়ায় ১৫ নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ করা হয়। একাত্তরের নভেম্বরের মাঝামাঝি রংপুর শহরের গুপ্তপাড়ায় এক ব্যক্তিকে নির্যাতন এবং ১ ডিসেম্বর শহরের বেতপট্টি থেকে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর রংপুর মুসলিম হোস্টেলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এসব ঘটনায় আজহারুলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন এবং এসব অপরাধে সহযোগিতা করার অভিযোগ গঠন করা হয়।
Discussion about this post