এস এইচ সৈকতঃ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৩তম শাহাদত বার্ষিকী আজ (মঙ্গলবার)। ১৯৭১ সালের এই দিনে ভোররাতএ মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই সীমান্ত চৌকিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান। স্বাধীন বাংলার জন্য তাঁর বীরত্ব গাথা অকুতোভয় যুদ্ধ ও নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও শত্রুর ক্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে শহীদ হওয়ায় ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত হন সিপাহী হামিদুর রহমান।
তাঁর বাড়ি ছিল ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আক্কাছ আলী মন্ডল ও মায়ের নাম কায়ছুন্নেছা।
জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ৪নং সেক্টরের একটি সাব-সেক্টর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থেকে ২৪অক্টোবর শেষ রাত হতে ২৮ অক্টোবর ভোর পর্যন্ত কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তে ইপিআর, পরবর্তীতে বিডিআর ফাঁড়ির সামনে থাকা পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ চলে মুক্তিবাহিনীর। ধলই সীমান্তে আক্রমণকারী মুক্তিবাহিনীর প্লাটুনের অ্যাসল্ট অফিসার ছিলেন মেজর (অব.) কাইয়ুম চৌধুরী। আর সিপাহী হামিদুর রহমান ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরীর রানার। চারদিকে চা-বাগান, মাঝখানে ধলই সীমান্ত চৌকি।
চৌকি থেকে দক্ষিণ- পূর্ব দিকে ত্রিপুরার কমলপুর সাব-সেক্টর ক্যাম্প থেকে সব প্রস্তুতি নিয়ে ২৮ অক্টোবর ভোরে কাইয়ুমের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাকিস্তানি সেনাদের ওপর চতুর্দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। ব্যাপক আক্রমণে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে আগুন ধরে যায়। প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ ও পাকিস্তানি বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিষ্ফোরিত হলে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হন। ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিডিআর বর্তমান বিজিবির উদ্যোগে সর্ব প্রথম লই সীমান্ত চৌকির পাশে নির্মাণ করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মরণী। ২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের
অর্থায়নে ১০ শতাংশ জায়গার ওপর সাড়ে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে গণপূর্ত বিভাগ নির্মাণ করে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিস্তম্ভ।
হামিদুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেক তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post