নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালার গেজেটের বিষয়ে ‘সুরাহা করতে’ সন্ধ্যায় আপিল বিভাগের সঙ্গে বসছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আইনমন্ত্রী আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে বসবেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ড. মো. রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চলতি মাসের ৫ নভেম্বর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে গেজেট প্রকাশে রাষ্ট্রপক্ষের করা চার সপ্তাহের সময়ের আবেদনের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছিলেন, আইনমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে বসতে চান। শুনানি শেষে গেজেট প্রকাশে আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল তার কার্যালয়েও সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘এ মামলায় আমরা আবারও চার সপ্তাহ সময় নিয়েছি। আমি আদালতকে জানিয়েছি, বিষয়টির কীভাবে সমাধান করা যায়, সে বিষয়ে আপিল বিভাগের সঙ্গে বসতে চান আইনমন্ত্রী।’
মাহবুবে আলম আরও বলেছিলেন, ‘প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যেভাবে চাইতেন, রুলস্টা যেভাবে হোক, তাতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নানাভাবে কার্টেল হওয়ার বিষয় দাড়িয়ে গিয়েছিলো। সেজন্য সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির কীভাবে সুষ্ঠুভাবে নিষ্পত্তি হতে পারে, সে ব্যাপারে চেষ্টা করছে সরকার। ৪ নভেম্বর আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমার এ ধরনের কথা হয়েছে।’
গত ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের ৪ সপ্তাহের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত গেজেট প্রকাশের সময় বাড়ান দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আর গত ২০ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানি শেষে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত গেজেট প্রকাশের সময় বাড়িয়েছিলেন।
এর আগে গত ৬ আগস্ট দুই সপ্তাহের সময় দিয়ে আলাপ-আলোচনা করার কথা বলেছিলেন সর্বোচ্চ আদালত।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
গত বছরের ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী।
এরপর সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। গত ১৬ জুলাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ সংক্রান্ত গেজেট শিগগিরই প্রস্তুত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন আইনমন্ত্রী। পরে ফের ২৭ জুলাই বিকেলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খসড়াটি হস্তান্তর করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
কিন্তু গত ৩০ জুলাই সকালে ছয় বিচারপতির বেঞ্চে শুনানিকালে আইনমন্ত্রীর দেওয়া খসড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলো। তিনি খসড়া দিয়ে গেলেন। আমি তো খুশি হয়ে গেলাম। যদিও খুলে দেখিনি। কিন্তু এটা কী!’
Discussion about this post