ঢাকার মিরপুরের সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির স্থাপত্য বিদ্যার শেষ বর্ষের ছাত্রী আফসানা ফেরদৌসকে আত্মহত্যায় সহায়তা ও লাশ গুমের চেষ্টার অপরাধে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার তিন আসামির রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর হাকিম মাজহারুল ইসলামের আদালতে আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
তিন আসামি হলেন- মশিউর রহমান, সিফাতুল হক সিফাত ও আশিকুল ইসলামের
এর আগে ১২ অক্টোবর কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক হাফিজ আহমেদ তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে মামলা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত শুনানির জন্য ১৯ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মামলার ভিকটিম আফসানাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেন এবং লাশ গুমের চেষ্টা করে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ভিকটিমকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য ও পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড প্রয়োজন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মামলার ভিকটিম আফসানার সঙ্গে রবিনের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। তাদের এফিডেভিটমূলে বিয়ে হয়। বিয়ের পর আফসানা কাবিনের জন্য চাপ দিলে তার কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে রবিন। এছাড়া আসামি রবিন আফসানাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে রবিন বলেন, হয় আমার দাবি পূরণ করো, নয়তো গলায় দড়ি দিয়ে মরো।
এরপর গত ১৩ আগস্ট রাতে অপরিচিত মোবাইল ফোন থেকে কল দিয়ে আফসানার মাকে জানানো হয়, আফসানার মরদেহ বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। এরপর আফসানার মা ঠাকুরগাঁও থেকে আত্মীয়স্বজনদের বিষয়টি জানালে আফসানার মামা ও অন্য স্বজনরা দ্রুত ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। কিন্তু সেখানে তারা মরদেহ দেখতে পাননি।
পরে আবারো একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয়, আফসানার মরদেহ মিরপুরের আল-হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে রয়েছে। সবাই সেখানে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এ নামে একটি মরদেহ কাফরুল থানায় রয়েছে। এরপর কাফরুল থানা থেকে আফসানার ছবি দেখালে থানায় ডিউটিরত এক পুলিশ সদস্য জানান, এমন চেহারার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। পরে রাত ৩টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে আফসানার মরদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই ফজলে রাব্বি গত ১১ অক্টোবর আফসানাকে আত্মহত্যায় সহায়তা ও লাশ গুমের চেষ্টার অপরাধে তেজগাঁও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- রবিনের বাবা আ. হাই, মশিউর রহমান, সিফাতুল হক সিফাত ও আশিকুল ইসলাম।
Discussion about this post