নিজস্ব প্রতিবেদক: বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্বস্তি প্রকাশ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নুসরাত হত্যা মামলায় ১৬ জনের ফাঁসির রায় হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে বিচারকার্য সম্পাদন হয়েছে। তা অবিশ্বাস্য মনে হলেও এখানে বিচার প্রক্রিয়াটা ত্বরান্বিত হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই স্বস্তি প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
রায় নিয়ে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়, তার পরিবারও সন্তুষ্ট হবে। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও আমরা স্বস্তি প্রকাশ করছি।
উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে ওই মাদ্রাসার কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় তাকে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত মারা যায়। এই ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই বাদী হয়ে ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
১০ এপ্রিল থানা থেকে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (পিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়। আদালত সূত্র জানায়, ২৯ মে এ মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই। চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ১০ জুন আদালত মামলাটি আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত। ২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে।
Discussion about this post