জেলার টেকনাফে গোপন বৈঠককালে এক সৌদি নাগরিক ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরএসওর নেতাসহ ৪ জনকে আটকের ঘটনায় ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে ৩ জনকে টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বিজিবি বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করে বলে জানান টেকনাফ থানার ওসি মো. আব্দুল মজিদ। মামলায় ২ বাংলাদেশি নাগরিক ও মিয়ানমারের আরএসওর নেতাসহ আটক ৩ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৮ জনকে পলাতক আসামি করা হয়েছে।
এরা হলেন- মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরএসওর বহু আলোচিত নেতা ও কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের মুহুরী পাড়ায় অবস্থিত একটি মাদরাসার পরিচালক হাফেজ ছালাউল ইসলাম (৫০), টেকনাফ উপজেলার চেয়ারম্যান জাফর আলমের বেয়াই ও বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকার মৃত মকবুল আলীর ছেলে হাফেজ ছৈয়দ করিম (৪৫), টাঙ্গাইল জেলার বাশাইল উপজেলার হাবাবিল পাড়ার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৪৭)। তবে মামলার পলাতক ৮ আসামির নাম প্রকাশে ওসি অসম্মতি জানান।
টেকনাফ থানার ওসি আবদুল মজিদ বলেন, ‘আটক সৌদি নাগরিক আবু সালেহ আল আহমেদ গাম্মী বিজিবির হেফাজতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন দপ্তরে রয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে যে ধরনের নির্দেশনা দেবে সেই আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উল্লেখ্য, শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকার টেকনাফ উপজেলার চেয়ারম্যান জাফর আলমের বেয়াই ছৈয়দ করিমের বাড়িতে গোপন বৈঠক চলাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের নিয়ে গঠিত বিশেষ ট্রাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে সৌদি নাগরিক আবু সালেহ আল আহমেদ গাম্মী ও আরএসওর নেতা ছালাউল ইসলামসহ ৪ জনকে আটক করে।
ঘটনার দিন বিজিবি জানিয়েছিল, গোপন বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম, ভাইস চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন, বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন, আরএসওর নেতা ছালাউল ইসলাম ও সৌদি নাগরিক আবু সালেহ আল আহমেদ গাম্মীসহ অনেককে অভিযানকালে দেখতে পান। পরে বৈঠক থেকে ৪ জনকে আটক করলে সংসদ সদস্য বদিসহ উপস্থিত অন্য জনপ্রতিনিধিরা বাধা দেন তাদের ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।
তবে অভিযোগের ব্যাপারে ঘটনার দিন সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি জানিয়েছিলেন, তিনি ওই সময় ইনানীতে ছিলেন। বাহারছড়ার শামলপুরে বিদেশি নাগরিকসহ কয়েকজন জঙ্গিকে আটকের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। এসে বিজিবি সদস্যদের দেখতে পান। পরে ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ ইকবালসহ পুলিশ সদস্যরা আসেন। ঘটনাস্থলে লোকজন জড়ো হলে ঝুট-ঝামেলার আশঙ্কায় ৪ জনকে সরিয়ে নিতে বিজিবির সদস্যদের অনুরোধ করেন।
এ ঘটনায় বিস্তারিত তথ্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রোববার যে কোএনা সময় গণমাধ্যম কর্মীদের জানানো হবে বলে অবহিত করা হলেও বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ সাংবাদিকদের সঙ্গে মুঠোফোনে সাড়া দেননি।
মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান টেকনাফ থানার ওসি আব্দুল মজিদ।
Discussion about this post