মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ২০ রাজাকারের মধ্যে মামলার অন্যতম আসামী ওসমান গনির পক্ষের আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে আসতে দেরি করেন। আর এ কারণে আসামির জামিনাবেদন খারিজের আরজি করেছেন প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে এমন আবেদন আসে। এর আগে সকালে নির্ধারিত সময়ে প্রসিকিউটর ও বিচারপতিরা ট্রাইব্যুনালে এসে পৌঁছালেও আসেননি আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী। তবে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরুর কিছু পর ট্রাইব্যুনালের এজলাশে এসে হাজির হন আসামিপক্ষের আইনজীবী তারিকুল ইসলাম।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের দেরি দেখে আসামি ওসমান গনির জামিন আবেদন নাকচের আরজি জানায় প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত। পরে ট্রাইব্যুনাল আসামিপক্ষের জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৫ মার্চ মামলার পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২২ মে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ১৬ রাজাকারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরে এই মামলায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে কারাগারে থাকা অবস্থায় আসামিদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকি ছয়জন কারাগারে রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, কক্সবাজারের ছালামতউল্লাহ খান, রশিদ মিয়া, মহেশখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ নলবিলা গ্রামের বাসিন্দা মৌলভী নুরুল ইসলাম, মহেশখালী পৌরসভার পুটিবিলা মুহুরী ডেইলের বাসিন্দা জিন্নাত আলী এবং ঘরকঘাটা জামায়াতের মৌলভী ওসমান গনি।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মহেশখালী দ্বীপে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এসবকল আসামীরা একাত্তরে স্থানীয় শান্তি কমিটির সভাপতি মৌলভী জাকারিয়ার ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি রশিদ মিয়ার সহযোগী ছিলেন। তবে ওই এলাকায় এখনো ৭০ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ৩১ জন বিভিন্ন সময়ে মারা গেছেন। বাকিদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে।
আরো অভিযোগ রয়েছে, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন মৌলভী নুরুল ইসলাম ও জিন্নাত আলী।
এ মামলার মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, মৌলভী জকরিয়া শিকদার (৭৮), মো. রশিদ মিয়া বিএ (৮৩), অলি আহমদ (৫৮), মো. জালাল উদ্দিন (৬৩), মোলভী নুরুল ইসলাম (৬১), মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাবুল (৬৩), মমতাজ আহম্মদ (৬০), হাবিবুর রহমান (৭০), মোলভী আমজাদ আলী (৭০), মৌলভী আব্দুল মজিদ (৮৫), বাদশা মিয়া (৭৩), ওসমান গণি (৬১), আব্দুল শুক্কুর (৬৫), মোলভী সামসুদ্দোহা (৮২), মো. জাকারিয়া (৫৮), মো. জিন্নাহ ওরফে জিন্নাত আলী (৫৮) মোলভী জালাল (৭৫) ও আব্দুল আজিজ (৬৮)।
তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে মোট ঘটনা ১৩টি। এর মধ্যে হত্যার ৯৪টি, নারী নির্যাতন অসংখ্য এবং লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ ব্যাপক। মামলায় মোট একশত ২৬ জন সাক্ষী রয়েছে।
Discussion about this post