নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেল্টা প্ল্যান, ব্লু ইকোনোমি, তরুণদের ক্ষমতায়ন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। এই চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইশতেহারের খসড়া তৈরি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সূত্র বলছে, এই ইশতেহার হবে মূলত উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের রোডম্যাপ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির এক সদস্য জানান, ইশতেহারের কয়েকটি খসড়া কাভার এবং শ্লোগান প্রস্তুত রয়েছে। তবে কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইশতেহারের শ্লোগান, কাভার এবং অন্যান্য সুনির্দিষ্ট তথ্য দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখার আগে কেউ বাইরে প্রকাশ করতে পারবে না। ইশতেহারের খসড়াটি চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেয়া হয়েছে। এখন তিনি সেটি চূড়ান্ত করবেন। এরপর তা প্রিন্ট করা হবে।
অন্য এক সূত্র জানায়, ডেল্টা প্ল্যান– এ আগামী ১০০ বছরের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। ১০০ বছরের কয়েকটি ধাপ উল্লেখ করে কোন সময় কী করা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। ১০০ বছর পর অর্থাৎ আগামী ২১০০ সালে দেশ কোথায় থাকবে, তা নিয়েও রয়েছে সুনির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য। এতে ২০২১ ও ২০৪১ এর আদলে থাকতে পারে ২০৬৬, ২০৯১ এবং ২১০০ সালের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের অবয়ব।
সূত্র জানায়, ব্লু ইকোনমিতেও আছে একটি লক্ষ্য। সমুদ্রসীমা জয়ের পর সেখানকার সম্পদ কিভাবে ব্যবহার করা হবে,কিভাবে সমুদ্র সুরক্ষা করা হবে, এসবের দিক নির্দেশনাও থাকছে এবারের ইশতেহারে। প্রকৃতি ও পরিবেশ ঠিক রেখে সমুদ্র সম্পদকে কিভাবে কাজে লাগানো যাবে, তার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
তরুণদের কর্মসংস্থান প্রশ্নে তাদেরকে দুই ক্যাটাগরিতে ভাগ করে পরিকল্পনা পেশ করা হবে। দুই ক্যাটাগরির একটি হচ্ছে- শিক্ষিত ও বেকার তরুণ। অন্যটি হলো- অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত তরুণরা। যার জন্য যেমন প্রশিক্ষণ ও কর্মসূচি প্রযোজ্য, তার জন্য তেমনই প্রশিক্ষণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া, দুর্নীতির বিরুদ্ধে থাকবে কঠোর ঘোষণা। দুর্নীতি প্রতিরোধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেগুলোর উল্লেখ থাকবে ইশতেহারে।
সূত্র জানায়, এবারের ইশতেহারে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে ঘোষিত বিষয়গুলোর অগ্রগতি তুলে ধরে আগামীর পরিকল্পনা সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এছাড়া, এবারের ইশতেহারে নতুন একটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-মাদকমুক্ত দেশ গড়া এবং উন্নয়ন-গণতন্ত্র-সুশাসনের ওপর আলোকপাত করা হবে। এবারও গত দুই ইশতেহারের মতো থাকবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ওপর বিশেষ গুরুত্ব।
ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা জানান, প্রতিশ্রুতিতে সারাদশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার অঙ্গীকারটি পুনর্ব্যক্ত করা হবে। এছাড়া, বিভিন্ন মেগাপ্রকল্পের অগ্রগতি ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কেও বলা হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইশতেহারের খসড়া সম্পন্ন করে জমা দেয়া হয়েছে। দলের সভাপতির মতামতের পর তা চূড়ান্ত করা হবে।
Discussion about this post