ইসলাম সম্পর্কে ইমামদের সঠিক বয়ান দিতেও অনুরোধ জানিয়েছেন হাইকোর্ট। ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের বিচারিক আদালতে দণ্ডের আপিলের রায় ঘোষণার সময় আদালত একথা বলেন। এছাড়া সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের দায়িত্ব বিষয়ে বেশকিছু পর্যবেক্ষণ দেন আদালত।
আদালত বলেন, মসজিদের ইমামের কাজ মুসল্লিদের নামাজ পড়ানো এবং ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়া। তিনি এমন কোনও বয়ান দিতে পারেন না যা দেশের আইনের পরিপন্থী। যদি কেউ ইসলাম ও মহানবী (সা.) সম্পর্কে বিরুপ বক্তব্য দেয় অথবা ফেসবুকে পোস্ট করে তবে তার বিচার প্রচলিত আইনে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারোর নেই।
পাশাপাশি মেরিটরিয়াসরা বিপথে কেন বলে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেছেন, ‘রাহমানি ছাড়া আসামিরা সবাই মেরিটরিয়াস। তারা কেন বিপথে গেলেন? এ মামলার মধ্যে আমরা তা খুঁজে পাইনি। তবে বিপথে যাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। কেউ কেউ অভিভাবকদের দায়ী করেন’।
আজ রোববার (২ এপ্রিল) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের উপর রায় দেন। রায়ে রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাইম অরফে দ্বীপের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই মামলায় নিম্ন আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের সাজাও বহাল রয়েছে।
ফাঁসির আসামি রেদোয়ানুল আজাদ রানা এই মামলার শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। সম্প্রতি ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপরই রানার আইনজীবী হাইকোর্টে ৫৬১(ক) ধারায় ডেথ রেফারেন্সে শুনানির সুযোগ চেয়ে আবেদন দাখিল করেন।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবীতে নিজ বাসার সামনে ব্লগার রাজীবকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ ওই হত্যার দায়ে মূল পরিকল্পনাকারী রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দ্বীপকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এছাড়া মাকসুদুল হাসান অনিককে যাবজ্জীবন, এহসান রেজা রুম্মান, নাফিজ ইমতিয়াজ ও নাইম শিকাদরকে ১০ বছর এবং সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানীকে ৫ বছরের দণ্ড দেয়া হয়। রাহমানী ছাড়া বাকি সাত আসামি বেসরকারি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
Discussion about this post