ইয়াংগুনের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার পার্কিংয়ে আততায়ীর গুলিতে খুন হয়েছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) আইনি পরামর্শক ও শীর্ষস্থানীয় মুসলিম আইনজীবী কো নি।
গতকাল রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে ইন্দোনেশিয়া সফর শেষে দেশে ফেরার পর তিনি নিহত হলেন। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের দপ্তরের মুখপাত্র জ তের বরাত দিয়ে দেশটির ইরাবতী পত্রিকা এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমারের তথ্যমন্ত্রী পি মিন্টের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য হিসেবে কো নি ইন্দোনেশিয়া সফর করেন। ইন্দোনেশিয়ায় বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে জাতীয়ভাবে বিরোধ মেটানোর অভিজ্ঞতা জানতে সরকারি কর্মকর্তা ও মুসলিম নেতাদের প্রতিনিধিদলটি দেশটি সফর যান।
পুলিশের বরাত দিয়ে মিয়ানমারের দৈনিক মিয়ানমার টাইমস জানিয়েছে, কো নির সন্দেহভাজন আততায়ী ৫৩ বছর বয়সী কাই লিনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। কো নির মাথায় নাইন এমএম পিস্তল দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় কাই লিনকে আটকের চেষ্টা করেন বিমানবন্দরের পার্কিংয়ে থাকা এক ট্যাক্সি চালক। তাঁকেও গুলি করে আহত করেন কাই লিন।
মিয়ানমারের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির দল এনএলডি ২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসে। এনএলডি ক্ষমতায় যাওয়ার অনেক আগেই সংবিধান সংশোধনীর কাজ শুরুর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কো নি। মিয়ানমারে জাতীয় বিরোধ মেটাতে কো নি সংবিধান সংশোধনের জোরালো সমর্থনকারীদের মধ্যে অন্যতম। এ নিয়ে সম্প্রতি সু চির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। যদিও এনএলডি ক্ষমতায় আসার পর অনেকের ধারণা ছিল মিয়ানমারের অ্যাটর্নি জেনারেল হবেন কো নি। তাঁর এই হত্যার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে জাতীয় বিরোধ নিষ্পত্তির পথ অনেকটা রুদ্ধ হয়ে গেল। দেশটির রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মিয়ানমারের জনগোষ্ঠীর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই বামার। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বিরোধ মেটানোর চেয়ে বামারদের কর্তৃত্ব অব্যাহত রেখে নিজের ক্ষমতা মসৃণ করতেই এখন সু চির সব মনোযোগ।
জাতিসংঘের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ র্যাপোটিয়ের ইয়াংঘি লি আজ টুইটে কো নির হত্যার গভীর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি দেশটির সবচেয়ে বিখ্যাত ও সম্মানিত মুসলিম আইনজীবী হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
Discussion about this post