মামলার ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্তক করে দিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেছেন, কোনও রায় বা আদেশে বিচারকের স্বাক্ষর হওয়ার পর, তা দ্রুত সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠিয়ে দেবেন। আপনারা যে পদে আছেন, এই পদে থেকে কোনও প্রকার দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়াবেন না। এ ধরনের কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে। কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার বিকালে সুপ্রিম কোর্টের অডিটোরিয়ামে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত অধস্তন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের একাধিক সূত্র।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন এমন একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অভিভাষণে বলেন, ‘কোর্টের কজলিস্ট (দৈনন্দিন কার্যতালিকা) প্রণয়ন নিয়ে কোনও অনিয়ম করবেন না।দিনের কাজ দিনে শেষ করবেন। সরকারি চাকরি অনেক মূল্যবান। জাজ সাহেবরা রায় বা আদেশ ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা সেকশনে পাঠাবেন। আর সেকশন সুপারকে অবশ্যই দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাইল ছাড় করতে হবে। এখানে কোনও ফাইল পাওয়া যাচ্ছে না, বা ফাইল প্রস্তুত হয়নি— এমন কোনও অজুহাত গ্রহণ করা হবে না। এ ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে তার কোনও ক্ষমা নেই।’
এছাড়া, রায় বা আদেশ পাওয়া নিয়ে বিচারপ্রার্থীদের যেন কোনোভাবে হয়রানি হতে না হয়, সে ব্যাপারেও সচেষ্ট হতে ও গুরুত্বারোপ করতে উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
অভিভাষণ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, ডেপুটি রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার, বেঞ্চ অফিসার, সহকারী বেঞ্চ অফিসারসহ প্রায় ৩০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। এর পরদিন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতিকে প্রথা অনুসারে সংবর্ধনা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিচার বিভাগের বিশেষ করে হাইকোর্টে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন। এরপর এক অনুষ্ঠানে হাইকোর্টের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। তবে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে এটাই প্রথম অভিভাষণ দেন প্রধান বিচারপতি।
Discussion about this post