বিডি ল নিউজঃ ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়-এই কথাটা নিছক বলার জন্য বলা নয়। এটার যুক্তিযুক্ত প্রমাণ যুগে যুগে অগণিত সফল ব্যক্তিত্ব দিয়ে গেছে। আর এই সব সফল ব্যক্তিত্বের সামনে বয়স কিংবা অর্থের কিংবা যোগ্যতা কিংবা অন্য কোন প্রকার সমস্যা বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। আজ আমরা শুনবো তেমনি কিছু যুবকের গল্প যারা ইচ্ছার প্রয়োগ দেখিয়ে উপায় বের করে এনেছে।
২০১৪ সালের রোজার ঈদের পূর্বে নিতান্তই ছোট্ট একটি উদ্যেগ গ্রহন করেছিলাম আমরা ক’জন। পরিকল্পনা নিয়েছিলাম ১০ জন পথ শিশুকে আমরা নিজেরা চাঁদা দিয়ে ১০ টি পোষাক প্রদান করব। এই উদ্দ্যেশ্যেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে (ফেইস বুক) একটি গ্রুপ করলাম এবং গ্রুপের নাম দিলাম “সবার তরে ঈদ”।
গ্রুপে এ্যড করলাম পরিচিত বন্ধু বান্ধবদের। ব্যাক্ত করলাম আমাদের উদ্দ্যেশ্য।সাড়া পেলাম আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশী। স্বতস্ফুর্ত ভাবে অনুদান প্রদান করল অনেকেই। আমরাও বিপুল উৎসাহ ও উদ্যম পেলাম।
১০ জনের স্থলে আমরা প্রায় ২০০ জন কে প্রদান করলাম ঈদের পোষাক ও কছিু দরদ্রি পরিবারের মাঝে সেমাই বিতরন করছি।২৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে প্রথমে আমরা সকাল ১০টায় মৈনার টেক স্কুল প্রাঙ্গনে পথশিশু ও দরিদ্র অসহায় শিশুদের মাঝে পোষাক বিতরণ করলাম।
তারপর ঔ দিনই বিকেল ৪ টায় উত্তরার বি.এইচ.বি.এফ.সি কলোনীর মাঠে পথশিশুদের মাঝে পোষাক বিতরণ করলাম।তারপরই সিদ্ধান্ত নিলাম অসহায় দরিদ্র, পথশিশু ও শ্রমজীবি শিশুদের নিয়ে আমরা নিয়মিত আমাদের সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাব। সেই লক্ষ নিয়েই প্রতিষ্ঠা করলাম “দীপ্ত শিখা”।
পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে আমরা উদ্যেগ নিলাম নিরক্ষর ও শ্রমজীবি শিশুদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করার, যেখানে প্রথমে আমরা অক্ষর জ্ঞান প্রদানের মাধ্যমে শুরু করব এবং ধীরে ধীরে এটিকে আরো সামনের দিকে অগ্রসর করব। মৈনারটেক বাসীদের সহযোগীতায় সেখানে বাজারে অবস্থিত একটি অব্যবহৃত ঘর এই কার্যে ব্যবহার করার অনুমতি পাওয়া গেল। সেই ঘড় মেরামত করে আমরা সেখানে ক্লাস নেওয়ার উপযোগী করে তুললাম। আমাদের স্কুলের নাম দিলাম “দীপ্ত শিখা নিকেতন”। ফেইস বুকে আমাদের গ্রুপে ব্যক্ত করলাম আমাদের উদ্দ্যেশ্য। এবারও সাড়া পেলাম প্রচুর। সকলের স্বতস্ফুর্ত সহযোগীতায় আমরা সকল প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র যোগাড় করলাম। ছাত্রও যোগাড় করা হল।
আমাদের স্কুলে সকালে এবং রাতে দুই পর্বে ক্লাশ শুরু করেছি … স্কুলে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ জনের কাছাকাছি … নৈশ শাখার ক্লাশটি বর্তমানে আর্থিক কারনে বন্ধ রেখেছি।আমাদের স্কুলের মাসিক খরচ নুন্যতম ১০ -১২ হাজার টাকা।
ঢাকার ক্যান্টনম্যান্ট এলাকায় আমরা ‘দীপ্ত শিখা’ নিকেতনের আরো একটি শাখা খুলতে যাচ্ছি। এই ব্যাপারে সেই এলাকার কিছু উদ্যমী যুবক এগিয়ে এসেছে।তাদের সহযোগীতায় আমরা অচিরেই সেই এলাকায় আমাদের আরো একটি শাখা প্রতিষ্ঠা করব।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা:
ভবিষ্যতে আমরা দীপ্ত শিখা নিকেতনে শ্রমজীবি শিশুদের বাস্তবমুখী শিক্ষা প্রদানের কোর্স চালু করব। কোর্সের অধীনে ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিকেল সহ বিভিন্ন ধরণের কোর্স করানো হবে। এখান থেকে বিনা খরচে কোর্স করে তারা স্বাবলম্বী হয়ে সমাজ থেকে বেকারত্বের অন্ধকার ঘুঁচাতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাষ।
এ ছাড়াও আমরা অদূর ভবিষ্যতে একটি বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহন করেছি।যাতে করে শুধু অসহায় শিশুই নয়, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও যেন তাদের বাকী জীবন পরম নিশ্চিন্তে কিছুটা সুখে শান্তিতে কাঁটিয়ে যেতে পারেন সে লক্ষ্যে আমাদের এই ভবিষ্যত পরিকল্পনা। আপনিও চাইলে আমাদের সাথে অংশ গ্রহন করতে পারেন।আমাদের পেইজের লিংক
Discussion about this post