মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে একদিনেই ঢাকা থেকে নবনির্মিত কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কাজে ব্যবহৃত হবে ৪০টি বড় প্রিজনভ্যান। যে কোনো ধরনের ঝামেলা এড়াতে ছুটির দিন বেছে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ সহযোগিতা চাইবে কারা কর্তৃপক্ষ।
কারা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল একটি সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য জানায়।
সূত্র জানায়, বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছে মোট আট হাজার। এর মধ্যে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের যে কোনো ছুটির দিন ছয় হাজার বন্দিকে কেরাণীগঞ্জের নতুন কারাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। বাকি দুই হাজার বন্দিকে পাঠানো হবে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। এরই মধ্যে সেখানে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে কারাগারে অবস্থানরত দাগী আসামি ও জঙ্গিদের স্থানান্তরের সময় নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। রাস্তায় যানজট এড়িয়ে নিরাপদে বন্দিদের স্থানান্তরের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ছুটির দিন।
এ বিষয়ে কারা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। এছাড়াও ঢাকা থেকে কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি স্থানান্তরের সময় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাইবে কারা কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছরের ১০ এপ্রিল কেরাণীগঞ্জে নির্মিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধনের পর থেকে কিছু কিছু করে বন্দি কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিদিনই ১শ থেকে ১শ ৫০ বন্দিকে কাশিমপুরে নেওয়া হচ্ছে। মে মাসের আগেই দুই হাজার বন্দিকে ঢাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে কাশিমপুর কারাগারে।
কেরাণীগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছয় হাজার বন্দি স্থানান্তরের জন্য একটি তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানায় সূত্র।
একটি ভ্যানে একবারে ৫০ জন করে তিন বারে ১শ ৫০ জনকে স্থানান্তরের কথা ভাবছে কারা কর্তৃপক্ষ। হিসাব অনুযায়ী, একদিনে স্থানান্তরের জন্য ৪০টি বড় প্রিজনভ্যান প্রয়োজন। তবে ছোট আকারের প্রিজনভ্যান হলে ছয় হাজার বন্দি স্থানান্তরে প্রয়োজন ৬০টি প্রিজনভ্যান।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, মে মাসেই নতুন কারাগারে বন্দিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। একদিনে একসঙ্গে ছয় হাজার বন্দিকে কেরাণীগঞ্জের নতুন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। এ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতাও চাইবো।
ছয় হাজার বন্দির তালিকা প্রস্তুতের বিষয়ে তিনি বলেন, এই তালিকা কোনো বন্দির ক্যাটাগরি বিবেচনা করে করা হবে না। সাধারণ বন্দি
হিসেবেই তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
কারাবন্দি স্থানান্তর প্রক্রিয়া শেষে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে? জানতে চাইলে সিনিয়র জেল সুপার বলেন, বন্দি স্থানান্তরের পর এখানে আমাদের কারারক্ষীরা পাহারায় থাকবেন। পরে কারা অধিদপ্তর সিন্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post