একাই রাজা, তাই সফল মোরিনহো

3
VIEWS

বিডি ল নিউজঃ হোসে মোরিনহো যখন দ্বিতীয় বার চেলসিতে ফিরল, তখন শুনেছিলাম অনেকে বলেছিল, ও গত বারের সাফল্য ছুঁতে পারবে না। আমার যদিও মনে হয়েছিল পারলে মোরিনহোই পারবেন। শনিবার চেলসি প্রিমিয়ার লিগ জেতার পরে বলা যেতেই পারে বিশ্ব ফুটবলে মোরিনহোর মতো কোচ খুব কমই আছেন। উনি সব সময় ‘টোটালিটেরিয়ান’ মানসিকতায় বিশ্বাসী। মোরিনহোর নীতিটা খুব সহজ। যে নীতি বলে কোচই হচ্ছে শেষ কথা। কোনও বড় ক্লাবে এই শৃঙ্খলাটা খুব জরুরি। সাফল্যের জন্যও। ফুটবলে সব সময় দেখা যায় কোচের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছে প্লেয়াররা। তবে মোরিনহো সে সব সহ্য করার লোক নন। দলের জন্য যে একশো শতাংশ দেবে না, তাকে ক্লাব থেকে বের করতে সময় নষ্ট করেন না। আবার কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেছেন, এই অভিযোগও কোনও দিন ওঠেনি ওঁর বিরুদ্ধে। ভাল ট্যাকটিসিয়ান হওয়ার পাশাপাশিও মোরিনহো একজন ভাল ম্যান ম্যানেজারও।

একজন কোচ কতটা ব়ড়, সেটা বোঝা যায় দুর্বল দল নিয়ে তিনি কতদূর কী করতে পারলেন, তার উপর। এফসি পোর্তো, ইন্টার মিলানকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দেওয়াটা মুখের কথা নয়। কোনও জায়গায় গিয়ে মোরিনহো সেরা দল পাননি। এ বারের চেলসিতেও নয়। ওঁর ক্ষমতা আছে নতুন দল গড়ে নেওয়ার। এই গুণটার জন্যই পেপ গুয়ার্দিওলার থেকে এগিয়ে রাখব মোরিনহোকে।  গুয়ার্দিওলা সেট টিম নিয়ে খেলতে নামেন। এই বছরও খুব বেশি ফুটবলারকে সই করাননি মোরিনহো। হাতে গোনা কয়েক জনকে সই করেছিলেন। আর সেই কোস্তা, ফাব্রেগাসরাই ভাল দলকে আরও ভাল করে তুলল। প্রধানত তিনটে কারণেই মোরিনহো ফের প্রিমিয়ার লিগ জিতলেন। এক, অসাধারণ ম্যাচ রিডিংয়ের ক্ষমতা। দুই, দলের মধ্যে ওঁর একক আধিপত্ব। তিন, বিপক্ষের শক্তি বুঝে ম্যাচ প্ল্যানিং।

  মোরিনহোর ছক নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে অভিযোগ জানিয়েছেন, মোরিনহো নাকি ‘পার্কিং দ্য বাস’ স্ট্র্যাটেজিতে খেলতে পছন্দ করেন। অর্থাৎ ডিফেন্সে লোক বাড়িয়ে। ওঁর দল নাকি বোরিং ফুটবল খেলে। আমার মনে হয় ভাল খেলে হারার থেকে খারাপ খেলে জেতা ভাল। একটা কোচের কেরিয়ারে ওঠাপড়াটা খুব লেগে থাকে। দল খারাপ খেললে প্রথম চাকরি হারাতে হয় কোচকেই। তাই দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার আগে ম্যাচ জেতো। মোরিনহো সেই জিনিসটাই করেন। ধারাবাহিকভাবে রেজাল্ট দিয়ে যান। দলের কেউ বিতর্কে জড়ালে সেটা নিজের দিকে টেনে নেন।

অনেকে বলতে পারেন, আন্তর্জাতিক স্তরে তো মোরিনহো কোচিং করান না। তাহলে ওঁর মূল্যায়নটা কী ভাবে হবে? আমি বলছি, ক্লাব কোচেদের কাজটা দেশের কোচেদের থেকে অনেক বেশি কঠিন। আন্তর্জাতিক দলের কোচেরা এক-দু’মাস অন্তর একটা বা দুটো ম্যাচ নিয়ে ভাবে। ক্লাব কোচেদের প্রতি সপ্তাহের চ্যালেঞ্জ। মোরিনহো ভবিষ্যতে কোনও দেশের কোচ না হলেও ওর শ্রেষ্ঠত্বে দাগ লাগবে না। স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসনও তো কোনও দিন দেশের কোচিং করাননি। তাতে কিছু যায় আসে না। শ্রেষ্ঠ কোচেদের নাম যখন নেওয়া হবে, তালিকায় হয়তো সবার উপরেই থাকবেন ফার্গুসন। আমার তালিকাতেও তো প্রথমে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের এই কিংবদন্তি কোচ। একটা ক্লাবে থেকে এতগুলো প্রজন্ম নিয়ে সাফল্য আনা। অবিশ্বাস্য। দু’নম্বরে থাকবেন মোরিনহো। ওঁর মতো ট্রফি হান্টার খুব কম দেখেছি। তিন নম্বর গুয়ার্দিওলা। দুর্দান্ত কোচ হলেও জানি না কোনও খারাপ দলকে পেলে কী করবেন।

সৌজন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা

Next Post

Discussion about this post

নিউজ আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.