স্বামী আলী হোসেনকে একাই হত্যা করেন পারভীন বেগম। হত্যার পর মুণ্ড বাড়ির পাশের একটি টিলায় গর্ত করে পুঁতে রাখেন। আর দেহ ফেলে আসেন জঙ্গলে। দীর্ঘ এক মাসের পরিকল্পনা ৩ নভেম্বর ভোর রাতে বাস্তবায়ন করেন তিনি।
পারভীন আক্তারের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানান, স্বামী প্রায় সময়ই তাকে নির্যাতন করতেন। ভাড়া বাসায় রেখে যাওয়ার পর খোঁজ-খবর নিতেন না। প্রায় একমাস পর তিনি জাফলং থেকে (আলী হোসেনের বাড়ি) বাসায় আসেন। এরই মধ্যে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করলেও, বাসায় না আসায় তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি তিনি।
আদালতে পারভীন আরও জানায়, ৩ নভেম্বর রাতে বাসায় আসার পর তার স্বামী ভীতসন্ত্রস্ত ছিলেন। রাতে ঘুমাচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে ফজরের নামাজের পর ঘুমিয়ে পড়েন। এর মধ্যে ফজর নামাজ পড়ে পারভীনের বাবা বাসা থেকে বেরিয়ে যান। তখন কোলের সন্তানকে বাবার (আলীর শ্বশুর) শোবার ঘরে রেখে দরজা বন্ধ করে আসেন তিনি। এরপর রামদা দিয়ে দুই কোপ মেরে স্বামীর মুণ্ড আলাদা করে ফেলেন। এরপর মুণ্ড পুঁতে রাখেন বাড়ির পাশে একটি টিলার গর্তে। আর দেহ ফেলে আসেন জঙ্গলে।
সোমবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে আটক করার পর পুলিশের কাছেও এ ঘটনার বর্ণনা দেন পারভীন।
মঙ্গলবার বিকেলে জবানবন্দি প্রদানের জন্য তাকে আদালতে হাজির করেন সিলেট মহানগরীর শাহপরান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজলে মাসুদ। প্রায় দেড়ঘণ্টা জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেন আদালত।
সাধারণ ডায়েরির (জিডি) সূত্র ধরে সোমবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে পারভীনকে আটক করে শাহপরান থানা পুলিশ। এরপর তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আলীর খণ্ডিত দেহ উদ্ধার করা হয়।
এ হত্যাকাণ্ড ঘটনা ঘটানো হয় শাহপরান থানাধীন পীরেরবাজার শাহসুন্দর মাজার সংলগ্ন মোকামেরগুল এলাকায়। আলী হোসেন মোকামেরগুলে স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে।
শাহপরান থানার দাশপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর মেয়ে পারভীন আক্তারের সঙ্গে তিন বছর আগে পাথর ব্যবসায়ী আলী হোসেনের বিয়ে হয়। তিনি চার সন্তানের জনক আলীর তৃতীয় স্ত্রী। আলীর অন্য দুই স্ত্রী জাফলংয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে।
Discussion about this post