শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢুকে পড়া মাশরাফি ভক্ত মেহেদী ও তার তিন বন্ধুকে এখনও থানা হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা। পাশাপাশি ওই যুবকদের কাছে টিকিট বিক্রি করা মো. সুমন নামে একজনকে খুঁজছে পুলিশ। সে মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী, তার বাড়িও সাভারে।
পুলিশের ধারণা, সুমন টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত। রবিবার দুপুরে টিকিটদাতা সুমনের খোঁজে সাভারের পশ্চিম রাজফুলবাড়িয়ার নতুনবাজার এলাকায় তার বাড়িতে যায় পুলিশ। কিন্তু তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এসময় মেহেদীর বাবা জয়নাল আবেদিনকেও সঙ্গে নেয় পুলিশ।
জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘আমার ছেলে নাকি সুমনের কাছ থেকে টিকিট কিনেছিল। পরে পুলিশ আমার কাছে জানতে চায়, আমি বাড়ি চিনি কিনা? আমি চিনি বললে আমাকে সঙ্গে নিয়ে সাভারে সুমনের বাড়িতে যায় পুলিশ। আমাকে গাড়িতে রেখেই তারা বাড়ির ভেতরে ঢোকে। শুনছি তখন বাড়িতে সুমনের বোন ছিল। কিন্তু সুমনকে পাওয়া যায়নি। এরপর আবার আমাকে মিরপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।
সুমন টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত কিনা বিষয়টা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সব আন্তর্জাতিক খেলার টিকিট সুমনের কাছে পাওয়া যায়। নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি মূল্য দিয়ে তার কাছ থেকে টিকিট নিতে হয়।
মিরপুর থানার সামনে মেহেদীসহ আটক চারজনকে দেখতে আসা মেহেদীর বন্ধু রাজ জানান, সুমন তাদের এলাকার সিনিয়র ভাই। তার সঙ্গে সুমনের ভালো সম্পর্ক না থাকলেও মেহেদীর সঙ্গে সুমনের সম্পর্ক ভালো। মেহেদীসহ অন্যরা তার কাছ থেকেই খেলার টিকিট কেনে।
মেহেদীর বাবাকে নিয়ে সাভারে যাওয়া মিরপুর থানার এসআই শামীম বলেন, ‘আমরা সুমনকে খুঁজতে সাভারে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। ও তো যাযাবর টাইপের। কাল রাত থেকেই নাকি বাড়িতে নাই। আমরা অন্যান্য সম্ভাব্য স্থানেও তার সন্ধান চালাচ্ছি।’
এদিকে সুমন স্টেডিয়ামের কর্মচারী কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান বিসিবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মেজর ইমাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রায় সাড়ে তিনহাজার লোক নিয়োজিত আছে। এদের মধ্যে সুমন আমাদের কেউ কিনা সেটা খতিয়ে দেখছি।’
স্টেডিয়াম থেকে আটকদের ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান, মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভুঁইয়া মাহবুব হাসান। তিনি বলেন, ‘আমরা ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। তাদের ব্যাপারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’ সুমন নামে একজনের খোঁজা হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান তৃতীয় একদিনের ম্যাচ চলাকালে হঠাৎ করেই মাঠে ঢুকে মাশরাফিকে জড়িয়ে ধরে মেহেদী হাসান সৈকত নামের এক যুবক। মেহেদী জানায় সে মাশরাফির ভক্ত। এরপর তাকেসহ তার তিনি বন্ধু আহমেদ মারুফ, আয়মান আসিফ রাফি ও আবির হোসেনকে খেলা শেষে মিরপুর মডেল থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Discussion about this post